ইরানের বিপ্লবী গার্ডের ক্ষেপণাস্ত্র যেকোনো শত্রুকে আক্রমণে প্রস্তুত
ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কোরের (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি সম্প্রতি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, আইআরজিসির ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এই অঞ্চলের যেকোনো শত্রু লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এবং শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পরাস্ত করতে পারে।
সোমবার রাজধানী তেহরানে এক অনুষ্ঠানে জেনারেল সালামি বলেন, “আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রগুলি এই অঞ্চলের যেকোনো শত্রু লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে এবং শত্রুর সমস্ত ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী ব্যবস্থাকে পরাস্ত করতে পারে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “এই শক্তিটি একসময় আইন আল-আসাদে প্রদর্শিত হয়েছিল, যা আমাদের মোকাবেলা করার ক্ষমতা এবং ইচ্ছাশক্তি প্রদর্শন করে। এই শক্তি আমাদের প্রতিরোধের ভিত্তি।”
জেনারেল সালামি ৩ জানুয়ারি ২০২০ সালে ইরাকের আল-আনবার প্রদেশে মার্কিন-নিয়ন্ত্রিত আইন আল-আসাদ বিমানঘাঁটিতে আইআরজিসির প্রতিশোধমূলক হামলার কথা স্মরণ করেন। ওই হামলা ছিল বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ড্রোন হামলায় ইরানের শীর্ষ সন্ত্রাস-বিরোধী কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ও তার সঙ্গীদের হত্যার প্রতিক্রিয়া।
তিনি আরও বলেন, “আজ, আইআরজিসি নৌবাহিনী যেকোনো জায়গায় শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।” কমান্ডার কোরকে “অন্যান্য সকল শক্তির চেয়ে মহান” হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, “আজ, আইআরজিসির পূর্ণ মহিমা [সত্যিকার অর্থে] চিত্রিত করা অসম্ভব। শত্রুরা শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু আইআরজিসি এবং (ইরান) বাসিজ (স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী) কখনও শেষ হবে না।”
ইরানের সামরিক শিল্পের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি রয়েছে, যা বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন করে। ইসলামী বিপ্লব এবং ইরান-ইরাক যুদ্ধের পর থেকে ইরান তার সামরিক শিল্পকে পুনর্গঠন করে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে। বর্তমানে, ইরান ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে এবং তার সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।
তবে, ইরানের এই সামরিক সক্ষমতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগের কারণ হয়েছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কোরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করার কথা বিবেচনা করছে। তাদের অভিযোগ, আইআরজিসি বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত এবং মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।
ইরান তার সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক প্রভাব ও প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে, এই প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে উত্তেজনা ও সংঘাতের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তুলছে।