রাস্তায় ব্যাপক ভিড়, বাড়ি ফিরছেন সাড়ে ৬ লাখ ফিলিস্তিনি
দীর্ঘ ১৫ মাসের বাস্তুচ্যুত জীবনের অবসান ঘটিয়ে সাড়ে ৬ লাখ ফিলিস্তিনি সোমবার গাজার উত্তরাঞ্চলে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। শরণার্থী শিবিরে মাসের পর মাস কাটানোর পর ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী পথ ধরে বিপুলসংখ্যক মানুষকে ফিরে যেতে দেখা গেছে। তবে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সহজ হবে না, কারণ পুরো উত্তর গাজা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলের লাগাতার বোমা হামলায় একসময়কার প্রাণবন্ত গাজা সিটি এখন শুধুই ধ্বংসের স্মারক।
যদিও যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল ১৯ জানুয়ারি, তবে কিছু শর্ত পূরণের পর সোমবার থেকে ফিলিস্তিনিদের ফেরার পথ উন্মুক্ত হয়। ইসরায়েল আরবেল ইয়াহুদসহ তিন জিম্মি মুক্তির শর্তে নেতজারিত করিডোর খুলে দেয়। সোমবার ভোর থেকে মানুষজন শিশুসহ তল্পিতল্পা নিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে পথে নামেন।
গাজার বাসিন্দা ফাদি আল সিনওয়ার বলেন, “আমরা ৪৭০ দিন ধরে শরণার্থী শিবিরে তাঁবুতে বাস করছিলাম। আমাদের বাড়ি খুব মিস করেছি।” আরেক বাসিন্দা নাদিয়া কাশেম বলেন, “দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর এ দিনটি এসেছে।” হামাস এই প্রত্যাবর্তনকে ‘বিজয়’ বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে, এটি দখলদারদের পরিকল্পনার ব্যর্থতার প্রমাণ।
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহ লড়াই বন্ধ থাকবে। এই সময়ে হামাস ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। ইতোমধ্যে সাতজনকে মুক্ত করা হয়েছে। অপরদিকে, ইসরায়েল তাদের কারাগারে আটক ৩০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। গাজার বাসিন্দারা সালাউদ্দিন রোড ধরে গাড়ি ও ভ্যানে করে ফিরে যাচ্ছেন। তাদের অস্ত্র বা বিস্ফোরক রয়েছে কিনা তা যাচাই করছে মিসরের সামরিক বাহিনী।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫০ জন জিম্মি হন। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় নজিরবিহীন নৃশংস হামলা চালায়, যাতে ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন। ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত হন। অবশেষে ১৫ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে এই দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটে। তবুও ফিলিস্তিনিদের সামনে নতুন করে শুরু করার চ্যালেঞ্জ বিরাজমান।