শপথ নিয়েই জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করলেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার বাতিল করেছেন। স্থানীয় সময় সোমবার, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই এ বিষয়ে এক নির্বাহী আদেশে সই করেন তিনি।
ট্রাম্পের নতুন আদেশ অনুযায়ী, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসা বা শিক্ষা-পর্যটনসহ সাময়িক ভিসায় অবস্থানরত অভিবাসীদের সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্ম নিলেও নাগরিকত্বের স্বীকৃতি পাবে না। তবে এই আইন তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, যাদের বাবা বা মা অন্তত একজন মার্কিন নাগরিক। এ নিয়ম চালুর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত বিষয়টি বাস্তবায়ন করলেন ট্রাম্প।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, আদেশ সই করার সময় ট্রাম্প স্বীকার করেন যে, এই সিদ্ধান্ত আইনগত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার সংরক্ষিত থাকায় এটি বাতিল করা নিয়ে আইনি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ট্রাম্প বলেন, “জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব একেবারে হাস্যকর একটি ধারণা, যা পরিবর্তন করা সময়ের দাবি।”
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে ক্যাপিটল হিলের রোটান্ডা কক্ষে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। এর আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন জে ডি ভ্যান্স। ট্রাম্পের সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তাঁর পরিবার, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডিরা।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে ও বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এটি অভিবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক এবং সংবিধানের মূল চেতনার পরিপন্থী। তারা আশঙ্কা করছেন, এই পদক্ষেপ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ এবং বসবাসের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিরুদ্ধে কথা বলছিলেন। তার মতে, এ আইন অভিবাসন নীতির দুর্বলতাকে তুলে ধরে এবং এর সুযোগ নিয়ে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করে। নতুন আদেশটি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অভিবাসন বিষয়ে কট্টর নীতির প্রতিফলন এবং এটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাবে। সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় এ আদেশ আইনি প্রক্রিয়ায় কতটা টিকে থাকবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।