ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক উপলক্ষে লন্ডনে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আগমন
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য লন্ডনে পৌঁছেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সেন্ট্রাল লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে দুই ঘণ্টা। বৈঠককে সামনে রেখে জাতীয় রাজনীতিতে ব্যাপক আগ্রহ ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট সফল গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার ফলে দেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছিল, তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপির মতাদর্শগত টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠককে রাজনৈতিক উত্তরণের টার্নিংপয়েন্ট হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বৈঠককে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও বলছেন, এটি জাতির জন্য একটি পজিটিভ বার্তা।
বৈঠককে কেন্দ্র করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর হঠাৎ লন্ডন আগমন কৌতূহল বাড়িয়েছে। দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত থাকবেন এবং তার আগ্রহে তিনি লন্ডনে এসেছেন। তবে দলের নেতারা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না।
প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের সময়ে যুক্তরাজ্যের বিএনপি নীরবতা বজায় রেখেছিল। ১০ জুন তার হোটেলে আগমনের সময় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিক্ষোভের মধ্যে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে ‘রিফর্ম বাংলাদেশ’ পক্ষের স্বাগত সমাবেশ ও পূর্ব লন্ডনের শহীদ আলতাব আলী পার্কে প্রধান উপদেষ্টার সমর্থনে বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তবে এসব আয়োজনে বিএনপির কর্মীদের উপস্থিতি চোখে পড়েনি।
এদিকে, শুক্রবারের বৈঠকের সময় হোটেলের সামনে বড় সমাবেশের আয়োজন করেছে যুক্তরাজ্য বিএনপি। তারা প্রস্তুতি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছে। সমাবেশে ব্যানার বা প্ল্যাকার্ড ব্যবহার না করে শুধু তারেক রহমানের নামে স্লোগান দেওয়া হবে।
বৈঠককে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল নয়াপল্টনে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, এই বৈঠক আগামী নির্বাচন, সংস্কার ও গণতন্ত্রের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি উল্লেখ করেছেন, শেখ হাসিনার ‘ষোলো আনা প্রভুত্ব’ এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে এই বৈঠক অত্যন্ত জরুরি।
বৈঠকে ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিন, সহ-দফতর সম্পাদক তরিকুল ইসলাম তেনজিং ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি জাহিদুল কবিরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।