গাজা অবরোধ ভাঙতে রওনা দিয়েছেন ১৫০০ অধিকারকর্মী, রাফা ক্রসিংয়ের পথে সড়কযাত্রা
ইসরায়েলি অবরোধে আটকে থাকা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে সড়কপথে বিশাল বহর নিয়ে রওনা হয়েছেন ১,৫০০-রও বেশি অধিকারকর্মী। তিউনিশিয়া থেকে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে তারা পৌঁছেছেন লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে। পরবর্তী ধাপে তারা মিসর হয়ে গাজার রাফা ক্রসিংয়ের দিকে অগ্রসর হবেন। ‘অবিচলিত’ নামে এই বহরে রয়েছে কয়েক ডজন বাস এবং একশরও বেশি গাড়ি। ধারণা করা হচ্ছে, বহরটিতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
বহরটি ত্রিপোলি পৌঁছালে তাদের স্বাগত জানাতে জড়ো হন হাজারো লিবিয়ান। লিবিয়ার পুলিশ এই মানবিক বহরটিকে নিরাপত্তাও দিয়েছে। ৪৫ বছর বয়সী এক স্থপতি আলা আব্দেল রাজ্জাক বলেন, “এই বহর আমাদের মধ্যে আনন্দ এনে দিয়েছে।” লিবিয়ান নারী সহুর আল-কাতিফ বলেন, “আমার মনে হচ্ছে আমি গাজায় আছি, লিবিয়ায় নয়।”
বহরটিতে রয়েছেন আলজেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মরক্কো এবং লিবিয়ার অধিকারকর্মীরা। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, লিবিয়া বর্তমানে দুটি প্রশাসনে বিভক্ত, এবং মিসরের সীমান্তবর্তী পূর্বাঞ্চলের প্রশাসন এখনো বহরটিকে মিসরের দিকে এগিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।
এই সড়কযাত্রার পেছনে প্রেক্ষাপট রয়েছে: গত সপ্তাহে পরিবেশবাদী গ্রেটা থুনবার্গসহ ১২ জন অধিকারকর্মী জাহাজে করে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করেন, যেটি আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী ছিনতাই করে নেয়। পরে তাদের ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখান থেকে চারজনকে মুক্তি দিলেও বাকিদের এখনো আটক রাখা হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ইতোমধ্যে এই বহরের প্রবেশ ঠেকাতে মিসরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, এই বহরের কারণে ইসরায়েলি সেনাদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে, তাই গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
২০ মাসের যুদ্ধ ও অবরোধে গাজায় ভয়াবহ খাদ্য সংকট চলছে। জাতিসংঘের মতে, গাজা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুধার্ত অঞ্চল। আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে ইসরায়েলের অনাগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যতিক্রমধর্মী সড়কযাত্রা বিশ্বজুড়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।