ইসরায়েলি হামলায় একদিনে নিহত আরও ৪০ ফিলিস্তিনি, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৫২ হাজার
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় একদিনেই অন্তত ৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১২৫ জন। বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে রোববার (৪ মে) এই তথ্য জানানো হয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডের পর ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৫৩৫ জনে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৯১ জনেরও বেশি মানুষ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে আছেন, যাদের উদ্ধারে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সামরিক অভিযানের ভয়াবহতা ও চলমান মানবিক সংকটের কারণে সেখানে উদ্ধার কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবারও নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হয়। সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৪৩৬ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৬ হাজার ৪৫০ জন ফিলিস্তিনি। এর মধ্য দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ইসরায়েলের হামলায় ভেঙে গেছে।
এর আগে, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল সাময়িকভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এতে গাজায় প্রায় দুই মাসের মতো শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। তবে হামাসের সঙ্গে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার ইস্যুতে মতবিরোধের জেরে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে ফের ইসরায়েল বিমান হামলা শুরু করে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অঞ্চলটির বেশিরভাগ অবকাঠামো ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
এই আগ্রাসনের জবাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গত বছরের নভেম্বরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলকে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হতে হচ্ছে।
গাজার চলমান মানবিক বিপর্যয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তবে তা সত্ত্বেও এখনো যুদ্ধ থামার কোনো ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না।