জৈবিক বার্ধক্য ধীর করতে সাহায্য করতে পারে কিছু প্রাকৃতিক খাবার
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা সম্প্রতি ‘এজিং’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, কিছু নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক উদ্ভিজ্জ খাবার জৈবিক বার্ধক্যকে ধীর করতে পারে। গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে বসবাসরত ৪৩ জন সুস্থ মধ্যবয়সী পুরুষ, যারা আট সপ্তাহের একটি বিশেষ জীবনধারা-ভিত্তিক প্রোগ্রামে অংশ নেন। এতে খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, ঘুম এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়া হয়েছিল।
গবেষণায় দেখা যায়, যাঁরা মিথাইল অ্যাডাপ্টোজেন ও পলিফেনলসমৃদ্ধ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহবিরোধী খাদ্য গ্রহণ করেছিলেন, তাঁদের জৈবিক বয়স অনেকটা ধীরগতিতে বাড়ছিল। বিশেষভাবে গাঢ় পাতা যুক্ত শাকসবজি, ব্রোকলি, বাঁধাকপি, বিট, কুমড়া, সূর্যমুখী বীজ, চেরি, আপেল, চর্বিহীন মাংস ইত্যাদি প্রতিদিন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া দুগ্ধজাত খাবার, শস্য, শিম ও অ্যালকোহল পরিহারের কথা বলা হয়েছে।
গবেষণা অনুযায়ী, জৈবিক বার্ধক্য বিলম্বে যেসব খাবার কার্যকর:
১। বেরি:
প্রতিদিন অর্ধকাপ করে বেরি খেলে শরীরে পলিফেনল নামক যৌগের উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়, যা প্রদাহ কমায় ও নিউরোনের সংযোগ শক্তিশালী করে। এটি মস্তিষ্কের বার্ধক্য রোধে কার্যকর।
২। রোজমেরি:
প্রতিদিন আধা চা চামচ রোজমেরি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে থাকা উপাদান আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
৩। হলুদ:
হলুদের প্রধান উপাদান কারকিউমিন বার্ধক্য প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন আধা চা চামচ হলুদ খাওয়া এই প্রক্রিয়াকে ধীর করতে সাহায্য করে।
৪। রসুন:
দুই কোয়া করে রসুন প্রতিদিন খেলে মস্তিষ্কের বয়সজনিত ক্ষয় প্রতিরোধ করা সম্ভব। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ বার্ধক্যের গতি কমাতে কার্যকর।
৫। গ্রিন টি:
প্রতিদিন দুই কাপ গ্রিন টি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। এটি ত্বকের কোলাজেন ক্ষয় বিলম্বিত করে এবং ত্বকে মেলানিন উৎপাদনও নিয়ন্ত্রণ করে।
৬। ওলং টি:
গ্রিন টি না পছন্দ হলে প্রতিদিন তিন কাপ ওলং টি খেতে পারেন। এতে তারুণ্য দীর্ঘ সময় ধরে বজায় থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্যাভ্যাসে এসব উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা, পাশাপাশি সুস্থ জীবনযাপনের চর্চা যেমন ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ও পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা—সব মিলিয়ে জৈবিক বার্ধক্যের প্রভাবকে অনেকটাই বিলম্বিত করা সম্ভব।