শুক্রবার, ৬ই জুন, ২০২৫| রাত ১০:৩১

অপারেশন সিঁদুরের পর ভারতে গুপ্তচর সন্দেহে একাধিক গ্রেপ্তার

প্রতিবেদক
staffreporter
জুন ৫, ২০২৫ ২:১৩ অপরাহ্ণ
অপারেশন সিঁদুরের পর ভারতে গুপ্তচর সন্দেহে একাধিক গ্রেপ্তার

অপারেশন সিঁদুরের পর ভারতে গুপ্তচর সন্দেহে একাধিক গ্রেপ্তার

ভারতে সাম্প্রতিক ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর থেকেই বাড়ছে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তারের ঘটনা। হরিয়ানার ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা, সিআরপিএফ জওয়ান মোতি রাম জাট, রাজস্থানের সরকারি কর্মী শকুর খানসহ একাধিক ব্যক্তি ইতিমধ্যে ধরা পড়েছেন গোয়েন্দা বিভাগ ও পুলিশের হাতে। সর্বশেষ বুধবার পাঞ্জাবের মোহালি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরেক ইউটিউবার জসবীর সিংকে, যিনি জ্যোতির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বলে জানিয়েছে পাঞ্জাব পুলিশ।

এর আগে সোমবার কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। এই অভিযানের সূত্রে একজন ট্র্যাভেল এজেন্ট, মহম্মদ মাসুদ আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাকে আর্থিক লেনদেন সম্পর্কিত বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয় বলে জানানো হয়। দিল্লিতে গ্রেপ্তার হওয়া সিআরপিএফ জওয়ান মোতি রাম জাটের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এই অভিযান চালানো হয়। এছাড়াও মঙ্গলবার রাজস্থান ও পাঞ্জাব থেকেও আরও দুইজন সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার হন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন দেশে গুপ্তচরবৃত্তি নতুন কিছু নয়। ভারতের ক্ষেত্রেও প্রতিবেশী দেশের হয়ে কাজ করা গুপ্তচরেরা আগেও ধরা পড়েছেন। ধর্মীয়, রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক প্রলোভনে সাধারণ মানুষ এই কাজে যুক্ত হতে পারেন। অনেক সময় সরাসরি সেনা সংক্রান্ত গোপন তথ্য নয়, বরং সাধারণ দৈনন্দিন তথ্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে।

সুরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়টি আরও বেশি উদ্বেগজনক। বিশেষ করে সিআরপিএফ জওয়ান মোতি রাম জাটের গ্রেপ্তারের ঘটনায় এটি আরও স্পষ্ট হয়েছে। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সামরিক বাহিনীতে অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা বিভাগ সক্রিয় থাকলেও কোনও বাহিনীর সদস্য যদি বিদেশি চর হিসেবে কাজ করেন, তা অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ অপারেশনের আগে যে ধরনের মাটি পর্যবেক্ষণের (রেকি) দরকার হয়, সেটির জন্যই মূলত এসব গুপ্তচর ব্যবহার করা হয়।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল শান্তনু রায় জানান, সামরিক বাহিনীর গোপন তথ্য খুব অল্পসংখ্যক সদস্যই জানেন এবং এসব তথ্য অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে রাখা হয়। এমনকি তথ্য ফাঁসের শাস্তি হতে পারে বরখাস্ত থেকে শুরু করে কোর্ট মার্শাল এবং সিভিল আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত।

তবে কলকাতার রাজনৈতিক মহলের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, গুপ্তচরবৃত্তি চালানোর জন্য সামরিক বা পুলিশ বাহিনীতে থাকা আবশ্যক নয়। অনেক সময় সাধারণ নাগরিকদের মাধ্যমেও গোপন তথ্য পাচার সম্ভব হয়। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা না থাকলেও, কার কাছে কী তথ্য আছে এবং সেই তথ্য কার দরকার— সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি