আইপিএল শিরোপার আনন্দে বিষাদের ছায়া, পদদলিত হয়ে নিহত ১১ জন
১৮ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রথমবারের মতো আইপিএল ট্রফি জয় করে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু (আরসিবি)। ৩ জুনের সেই ঐতিহাসিক দিনে ব্যাঙ্গালোর শহরে বইতে থাকে উৎসবের হাওয়া। কিন্তু আনন্দের সেই মুহূর্তেই নেমে আসে গভীর শোক। আইপিএল শিরোপাজয়ী আরসিবিকে এক নজর দেখতে রাস্তায় নেমে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। অতিরিক্ত ভিড় ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে পদদলিত হয়ে প্রাণ হারান অন্তত ১১ জন।
ঘটনার পরপরই ব্যাঙ্গালুরুতে আরসিবির সম্মানে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। কর্নাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (কেএসসিএ) ও আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজির যৌথ আয়োজনে এই অনুষ্ঠান চলছিল। স্টেডিয়ামের বাইরে তুমুল ভিড়ের চাপে যখন পদদলনের ঘটনা ঘটে, তখন ভিতরে অনুষ্ঠান চলমান ছিল। ফলে দুর্ঘটনার পরও অনুষ্ঠান কিছুক্ষণ চলায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করে—কে এর জন্য দায়ী?
এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। দায় চাপানো হয় একে অপরের ওপর। তবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ও আইপিএল কর্তৃপক্ষ সরাসরি কোনো পক্ষ নেয়নি। তারা জানিয়েছে, ঘটনাটি জানার পর দ্রুত অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হয়।
বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং জনপ্রিয়তার এক নেতিবাচক প্রতিফলন। আয়োজকদের আরও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত ছিল। এই ঘটনার সঙ্গে বিসিসিআইয়ের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, তবে এখান থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। মৃতদের প্রতি সমবেদনা জানাই, আর আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।’
আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমাল বলেন, ‘স্টেডিয়ামের বাইরে কী ঘটেছে, তা আরসিবি কর্তৃপক্ষ জানতেন না। তারা জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করেন। আমরাও বিজয় উৎসব বন্ধ করতে অনুরোধ জানাই।’
বিসিসিআই সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা বলেন, ‘ঘটনার সঠিক কারণ এখনই বলা সম্ভব নয়। কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থার কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’
শিরোপা জয় উদ্যাপন করতে গিয়ে এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা পুরো ভারতজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। আনন্দঘন এক উৎসব মুহূর্ত যে কীভাবে গভীর শোকে রূপ নিতে পারে—ব্যাঙ্গালোরের ঘটনা তারই এক করুণ উদাহরণ।