ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে একটি সম্ভাব্য পারমাণবিক চুক্তিতে পৌঁছানোর খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে ওয়াশিংটন ও তেহরান। উপসাগরীয় অঞ্চলের তিন দেশ সফরের সময় ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি জানান, ইরান ইতোমধ্যে চুক্তির বেশ কিছু শর্তে “আংশিকভাবে রাজি” হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, “আমরা দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা এমন একটি চুক্তির পথে এগোচ্ছি, যেখানে আমাদের হয়তো শক্তি প্রয়োগ করতে হবে না। এই চুক্তিতে পৌঁছানোর দুটি পথ আছে—একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ, অন্যটি সহিংস। তবে আমি দ্বিতীয় পথটি চাই না।”
তবে আলোচনায় যুক্ত ইরানের একটি সূত্র জানিয়েছে, চুক্তির বিষয়ে এখনও দুই দেশের মধ্যে অনেক মতপার্থক্য রয়েছে।
এই সম্ভাব্য চুক্তির প্রভাব ইতোমধ্যেই বিশ্ববাজারে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার তেলের দাম প্রায় ২ ডলার হ্রাস পেয়েছে। কারণ, চুক্তি হলে ইরানের ওপর থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে, যার ফলে বৈশ্বিক জ্বালানিবাজারে সরবরাহ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে গত রোববার ওমানে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক ইস্যুতে চতুর্থ দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে সমঝোতার লক্ষ্যে পরবর্তী দফার পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। যদিও তেহরান জানিয়েছে, তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালু রাখবে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ওই বৈঠকে ইরানকে একটি চুক্তির প্রস্তাব দেয়। তেহরান ও ওয়াশিংটন উভয় পক্ষই কূটনৈতিকভাবে এই দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার সমাধান চান, যদিও এখনও বেশ কিছু বিষয়ে মতবিরোধ রয়ে গেছে। আলোচকরা এই মতপার্থক্য দূর করে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য সামরিক সংঘাত এড়ানোর চেষ্টা করছেন।
ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যের “সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক শক্তি” হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, “ট্রাম্প আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে, হুমকি দিয়ে পরে মানবাধিকারের কথা বলেন। এই অঞ্চলের সব অস্থিতিশীলতার উৎস তারাই।”
এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের এক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে চুক্তি করতে আগ্রহী তেহরান।
এছাড়া, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলি শামখানি বলেছেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে না এবং বিদ্যমান প্রযুক্তিও ধ্বংস করতে প্রস্তুত। তারা কেবল বেসামরিক চাহিদা অনুযায়ী ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে এবং আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের তদারকি মেনে চলবে।
সূত্র: এএফপি