কাশ্মীর সীমান্তে ফের আগুনের লেলিহান শিখা! ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি সংঘর্ষে চরম উত্তেজনা!
দক্ষিণ এশিয়ার চিরচেনা অশান্ত সীমান্ত, কাশ্মীর আবারও জ্বলে উঠেছে আগুনের লেলিহান শিখায়।
শনিবার গভীর রাতে, স্থানীয় সময় ২৬ এপ্রিল, নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ গোলাগুলি হয়, যা গোটা অঞ্চলে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে।
দুই ভিন্ন দাবি, এক উত্তপ্ত বাস্তবতা
ভারতীয় সংএনডিটিভি জানিয়েছে, পাকিস্তান সেনারা কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করে হামলা চালিয়েছে।
অন্যদিকে, চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংসিনহুয় দাবি করেছে, সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল ভারতীয় সেনাদের গুলি চালানো দিয়ে। এরপরই জবাবি হামলায় পাকিস্তানি সেনারা পাল্টা আক্রমণ চালায়।
বর্তমানে দুই পক্ষের কেউই হতাহতের আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য নিশ্চিত করেনি। তবে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, মানুষজন ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে।
পেছনের ঘটনা: পহেলগামের রক্তাক্ত হামলা
কাশ্মীরের বর্তমান উত্তেজনার পেছনে রয়েছে কয়েকদিন আগের একটি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা।
২২ এপ্রিল, জম্মু-কাশ্মীরের জনপ্রিয়পহেলগাম-এ সশস্ত্র বন্দুকধারীরা নির্বিচারে গুলি চালায়, যাতে প্রাণ হারান অন্তত ২৬ জন নিরীহ পর্যট।
ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে এই হামলার জন্য দায়ী করে। তবে ইসলামাবাদ এমন অভিযোগ তীব্রভাবে অস্বীকার করেছে।
কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন
পহেলগামের ওই হামলার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে।
ভারত স্থগিত করেছে বহু পুসিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানসিমলা চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে এবং নিজেদের আকাশসীমা ভারতীয় বিমানের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।
এতেই শেষ নয়—দুই দেশই একে অপরের নাগরিকদ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফিরে যেত নির্দেশ দিয়েছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একাধিক ভিসা কার্যক্রম, যাতায়াতও হয়ে পড়ছে প্রায় অসম্ভব।
শান্তির ডাক, কিন্তু কী ফল হবে?
চরম উত্তেজনার এই আবহে শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রভাবশসৌদি আরব ও ইরান। তারা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে।
এছাড়া জাতিসংঘও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে উভয় পক্ষকেসংযম প্রদর্শন আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো—কাশ্মীরের আকাশ এখনো ভারী বারুদের গন্ধে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, যদি অবিলম্বে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনা হয়, তবে দক্ষিণ এশিয়া আবারও বড় ধরনের সংঘর্ষের মুখোমুখি হতে পারে।
সময় বলবে ভবিষ্যৎ কী
বর্তমান পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, এলওসি বরাবর যে কোনো সময় আবারও বড় ধরনের সংঘর্ষ বাঁধতে পারে।
বিশ্ববাসী এখন শঙ্কার চোখে তাকিয়ে আছে—কাশ্মীরের আকাশে কি ফের বাজবে যুদ্ধের দামামা?