পুষ্টি আর রোগ প্রতিরোধে আনারসের অসাধারণ ভূমিকা
আনারস এমন একটি ফল, যা পুষ্টি, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজে পরিপূর্ণ। এতে থাকা ব্রোমেলেন নামের এক জাদুকরী এনজাইম নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে। মিষ্টি ও রসালো এই ফলটি ভিটামিন সি-এর দুর্দান্ত উৎস, পাশাপাশি এতে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাংগানিজ, আয়রন, ভিটামিন বি৬ ও প্রচুর ফাইবার। নিয়মিত আনারস খাওয়ার মাধ্যমে দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদার অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব হয়।
আনারস অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চমৎকার উৎস, বিশেষ করে এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ক্যানসারসহ দীর্ঘস্থায়ী নানা রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। পর্যাপ্ত ফাইবার থাকায় এটি অন্ত্রে উপকারী জীবাণু সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্য ও স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে। নিউট্রিশন অ্যান্ড মেটাবলিজম সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, নিয়মিত আনারস খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।
ভিটামিন সি-এর উচ্চমাত্রা শরীরে প্রচুর কোলাজেন তৈরি করে, যা কোষের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন আনারস খান, তাদের ভাইরাল ও ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে।
আনারসে থাকা ব্রোমেলেন খাবারের প্রোটিন দ্রুত ভেঙে অ্যামিনো অ্যাসিড ও পেপটাইডে রূপান্তর করে, ফলে হজম দ্রুত হয়। ১৯৬০-এর দশকের গবেষণাগুলো দেখিয়েছে যে ব্রোমেলেন আর্থ্রাইটিসের প্রদাহজনিত ব্যথা কমাতে কার্যকর। একই সঙ্গে, কারেন্ট আলঝেইমার রিসার্চ-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে আনারস আলঝেইমার প্রতিরোধেও সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।
ত্বকের ক্ষেত্রেও আনারসের ভূমিকা অনন্য। ভিটামিন সি ত্বকের অকাল বার্ধক্য রোধ করে, বলিরেখা পড়ার প্রবণতা কমায় এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়। প্রাণী গবেষণায় দেখা গেছে, আনারসের ব্রোমেলেন ফাইব্রিন নামক প্রোটিন উৎপাদন কমিয়ে রক্ত ধমনীতে জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমাতে পারে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, হেলথলাইন, রিডার্স ডাইজেস্ট ও ওয়েবএমডি