এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতিতে জর্ডানে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল
আগামী ২৩ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়ান কাপ বাছাই পর্ব। মিয়ানমারে অনুষ্ঠিতব্য এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক মিয়ানমার, বাহরাইন ও তুর্কেমেনিস্তান। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো নারী ফুটবলে এশিয়া কাপে জায়গা করে নেবে। এই লক্ষ্য সামনে রেখে মে মাসের শেষ সপ্তাহে নারী দলকে জর্ডানে পাঠাচ্ছে বাফুফে, যেখানে তারা একটি ত্রিদেশীয় আন্তর্জাতিক সিরিজে অংশ নেবে। তৃতীয় দল হিসেবে থাকছে ইন্দোনেশিয়া।
বাংলাদেশ দল বর্তমানে ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের অধীনে ঢাকায় অনুশীলন করছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই অনুশীলনকে আরও ফলপ্রসূ করতে জর্ডানে ৩১ মে ও ৩ জুন দুটি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা নিয়েছে বাফুফে। কোন তারিখে কোন দলের বিপক্ষে খেলা হবে, সেটি এখনও নির্ধারিত হয়নি। তিন দলই একে অপরের বিপক্ষে দুটি করে ম্যাচ খেলবে, তবে কোনো ফাইনাল বা ট্রফি নির্ধারিত থাকছে না।
বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ জানিয়েছেন, “জর্ডানে ম্যাচ খেলতে আমরা নারী দলকে ২৭ মে পাঠাব। জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে খেলে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা বাছাইয়ে ভালো করতে পারব।” তার মতে, জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার র্যাংকিং যথাক্রমে ৭৪ ও ৯৪ হওয়ায় এই ম্যাচগুলো দলের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে।
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও বাফুফে আশাবাদী। কিরণ জানিয়েছেন, খেলার ভেন্যু এখন পর্যন্ত জর্ডানের রাজধানী আম্মানে এবং ইন্দোনেশিয়াও অংশ নিচ্ছে— সবদিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে জাতীয় দলের ১০ জন সিনিয়র ফুটবলার বর্তমানে ভুটানে নারী লিগ খেলছেন। তারা জর্ডান সফরের দলে ডাক পাবেন কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন কোচ। কিরণ বলেন, “দলের নির্বাচন সম্পূর্ণ কোচের উপর নির্ভর করছে। পারফরম্যান্স ও ফিটনেস বিবেচনায় রেখে কোচ দল চূড়ান্ত করবেন।”
২০২৩ সালে বিদেশি লিগে খেলার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাফুফে তখন ফ্র্যাঞ্চাইজ লিগের কারণে খেলোয়াড়দের ছাড়েনি। এবার ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। কিরণ জানান, সাবিনা খাতুনসহ সিনিয়ররা তাকে জানিয়েছে, তাদের ক্লাবে ভালো মানের অনুশীলন হচ্ছে এবং তারা ফিট থাকছেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে বাফুফে ৩৭ জন নারী ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করলেও, কোচ বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ১৮ জনের মধ্যে ১৪ জন এখন অনুশীলনে ফিরেছেন। তারা ফিরে আসায় তাদের সঙ্গেও নতুন করে চুক্তির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান কিরণ। তার ভাষায়, “অনুশীলনে জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে কোচ ব্যক্তিগত কারণে কাউকে বাদ দিতে পারবেন না। চূড়ান্ত দল গঠনে ফিটনেস ও পারফরম্যান্সই মূল বিবেচ্য হবে।”
সবমিলিয়ে নারী ফুটবলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন আন্তর্জাতিক প্রস্তুতি সফর দেশের জন্য একটি বড় অর্জন হতে চলেছে, যা এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের জন্য দলের আত্মবিশ্বাস ও অভিজ্ঞতা বাড়াতে সহায়ক হবে।