ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত গ্রীষ্মকালীন ফল
তীব্র গরমের সময় শরীরের চাহিদা অনুযায়ী রসালো ও সতেজ ফল খাওয়ার আগ্রহ যেমন বাড়ে, তেমনি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই আগ্রহ পূরণ করতে হয় কিছু সতর্কতা মেনেই। কারণ সব ফলের প্রাকৃতিক চিনির মাত্রা এক নয়, এবং কিছু ফল রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে। তবে এমন কিছু গ্রীষ্মকালীন ফল রয়েছে, যেগুলো পরিমিতভাবে খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারীই হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা কম গ্লাইসেমিক সূচক এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত ফল বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
জাম হলো গ্রীষ্মের এমন একটি ফল, যার গ্লাইসেমিক সূচক মাত্র ২৫। এতে থাকা ‘জাম্বোলিন’ নামক একটি বিশেষ যৌগ স্টার্চকে ধীরে শক্তিতে রূপান্তর করতে সাহায্য করে, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এমনকি আয়ুর্বেদ চিকিৎসাতেও জাম বীজের গুঁড়ো ব্যবহার করা হয় ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায়।
পেয়ারা আরেকটি উপকারী ফল, যা কম ক্যালোরি এবং প্রচুর ফাইবারে সমৃদ্ধ। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। পেয়ারা জুসের পরিবর্তে সম্পূর্ণ ফল খাওয়াই ভালো, কারণ এতে ফাইবার নষ্ট হয় না। পাশাপাশি এর ভিটামিন সি উপাদান শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে কার্যকর।
পেঁপে এমন এক ফল, যা হালকা ও সহজপাচ্য। এতে ফ্ল্যাভোনয়েড জাতীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। যারা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে চান, তাদের জন্য একটি বাটির পাকা পেঁপে হতে পারে স্বাস্থ্যকর বিকল্প।
তরমুজ যদিও রসাল ও স্বাদে মিষ্টি, তবুও ডায়াবেটিস রোগীরা এটি খেতে পারেন সীমিত পরিমাণে। কারণ তরমুজে প্রায় ৯০% পানি থাকে, যা শরীরকে দ্রুত হাইড্রেট করে। তবে রক্তে শর্করার ওঠানামা ঠেকাতে তরমুজের সঙ্গে সামান্য বাদাম বা কোনো প্রোটিনজাত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।
অন্যদিকে পীচ একটি সুগন্ধি, পুষ্টিকর এবং ভিটামিন এ, সি ও পটাসিয়াম সমৃদ্ধ ফল। এটি শরীরকে হাইড্রেট করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। অবশ্যই টিনজাত পীচ নয়, বরং তাজা ফল খাওয়াই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ বিকল্প।
পরিশেষে বলা যায়, ফল খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পুরোপুরি নিষিদ্ধ নয়, তবে পরিমাণ, সময় এবং উপযুক্ত ফল বাছাইয়ের মাধ্যমেই তা উপকারে আসে।