শেখ হাসিনা ইস্যুতে মোদির ভূমিকা নিয়ে ড. ইউনূসের অভিযোগ
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস অভিযোগ করেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সরকারকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেননি। ব্রিটিশ থিঙ্কট্যাংক সংস্থা চ্যাথাম হাউসে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
চ্যাথাম হাউসে বুধবার দেওয়া বক্তব্যে ড. ইউনূস জানান, গত এপ্রিল মাসে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের সময় তিনি প্রথমবারের মতো মোদির সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের সুযোগ পান। সেখানে তিনি মোদিকে অনুরোধ করেন, শেখ হাসিনাকে অন্তত বাংলাদেশ সম্পর্কে উস্কানিমূলক মন্তব্য না করতে পরামর্শ দেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, “আমি তাকে বলেছিলাম— আপনি তাকে আশ্রয় দিচ্ছেন, এতে আমরা কিছু বলছি না; তবে তার প্রকাশ্য মন্তব্য বাংলাদেশের জনগণকে ক্ষুব্ধ করছে। অনুরোধ করছি, তাকে চুপ থাকতে বলুন।” এই অনুরোধের জবাবে মোদি বলেন, “এটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিষয়, আমরা এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।” ড. ইউনূস মন্তব্য করেন, “এমন উত্তরের পর আর কিছু বলার থাকে না। পরিস্থিতি আসলেই বিস্ফোরক।”
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান এবং বর্তমানে দিল্লির একটি সেফ হাউজে অবস্থান করছেন। সম্প্রতি নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলন দমনের সময় দেড় হাজারের বেশি মানুষকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে, যার বিচার চলছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে।
ড. ইউনূস জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং তাকে তলবও করা হয়েছে। “যদি তিনি সাড়া না দেন, তাহলে আমরা ইন্টারপোলের সহায়তা নেব। গোটা প্রক্রিয়াটি হবে আইনানুগ ও যথাযথভাবে।”
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দিল্লির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে চায়। তবে তিনি অভিযোগ করেন, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভুয়া সংবাদের কারণে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জটিল হয়ে উঠছে। “অনেকে মনে করেন, এসব ভুয়া সংবাদ ভারতের নীতি নির্ধারকদের ইঙ্গিতে ছড়ানো হচ্ছে, যা বাংলাদেশকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে।”
সূত্র: ফার্স্টপোস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া।