গাজায় তীব্র খাদ্যসংকট, প্রাণ হারিয়েছে শিশুরা, ইসরায়েল দিল ১০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি
দখলদার ইসরায়েলের অবরোধের ফলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত আড়াই মাস ধরে কোনো খাদ্য, পানি বা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস গাজায় প্রবেশ করতে দেয়নি ইহুদিবাদী বাহিনী। ফলে গাজার মানুষ ভয়াবহ খাদ্যসংকটে পড়েছেন, এমনকি তারা পশুর খাবার ও বালুযুক্ত আটা খেতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
খাদ্যের এই চরম সংকটে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে শিশুরা। অপুষ্টিকর খাবার খাওয়ার কারণে তারা ডায়রিয়া, দুর্বলতা এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় ভুগছে। ইতোমধ্যেই গাজায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। জাতিসংঘের সমন্বিত খাদ্য নিরাপত্তা পর্যায় শ্রেণিবিভাগ (আইপিসি) জানিয়েছে, ইসরায়েলের অবরোধ ও চলমান যুদ্ধের কারণে গাজার প্রায় ৯ লাখ ৩০ হাজার শিশু দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। চলতি বছরের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত খাবার সংকটে প্রাণ হারিয়েছে ৫৭ শিশু।
আইপিসি সতর্ক করে জানিয়েছে, অবরোধ যদি আরও দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে আগামী ১১ মাসের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৭১ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত হবে।
এই অবস্থায় সোমবার প্রথমবারের মতো দখলদার ইসরায়েল গাজায় পাঁচটি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেয়। আজ মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক অফিস জানায়, আরও প্রায় ১০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের মুখপাত্র জেনস লার্কে বলেন, “আমরা আরও ট্রাক প্রবেশের অনুমতি চেয়েছিলাম এবং পেয়েছি। এটি গতকালের তুলনায় অনেক বেশি।” তিনি আরও জানান, নতুন করে আসা ট্রাকগুলোতে শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবার রয়েছে এবং সেগুলো আগের ব্যবস্থার মতোই বিতরণ করা হবে, যা অতীতে কার্যকর ছিল।
তবে বিতরণ ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে। এতদিন জাতিসংঘ ও বিভিন্ন এনজিও ত্রাণ বিতরণের কাজ করলেও, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে এখন নতুন একটি সংস্থার মাধ্যমে এই কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এ পরিকল্পনা ব্যর্থ হতে পারে এবং এতে করে সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে ত্রাণ পৌঁছানোর প্রক্রিয়া আরও বাধাগ্রস্ত হবে।
সূত্র: আলজাজিরা, টাইমস অব ইসরায়েল।