প্রকৃত সাংবাদিকদের স্বচ্ছ যাচাইয়ের মাধ্যমে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দেওয়ার আশ্বাস
প্রকৃত সাংবাদিকদের দ্রুত অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী গণমাধ্যমের হালচাল’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, স্বচ্ছতা ও যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে প্রকৃত সাংবাদিকদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড প্রদান করা হবে। আগের মতো সংসদ সদস্য বা রাজনৈতিক নেতাদের তদবিরে কার্ড প্রদান আর হবে না। তিনি আরও বলেন, ১৬৭টি অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলের ঘটনাকে ‘একটি ভুল’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে নতুন কমিটি ও নীতিমালা গঠন করা হয়েছে। নতুন নীতিমালা সহজ এবং সাংবাদিকবান্ধব করা হয়েছে, যাতে কার্ডধারী সাংবাদিকদের বিদেশ যাত্রায় আর সরকারের অনুমতির প্রয়োজন না হয়।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ৯ মাসে গণমাধ্যম পূর্ণ স্বাধীনতা উপভোগ করছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মিডিয়া বন্ধ না করে বরং ব্লক করা কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম পুনরায় চালু করা হয়েছে। ফেসবুকে কিছু সাংবাদিক মিথ্যা তথ্য দিলেও তাদের আদর্শিক অবস্থান বিবেচনায় বাকস্বাধীনতা হরণ করা হয়নি। তবে প্রতিটি গণমাধ্যমে সাংবাদিকদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে গাইডলাইন থাকা উচিত বলে মত দেন তিনি।
তিনি জানান, গত বছরের ৫ আগস্টের পর হওয়া ২৬৬টি হত্যা মামলার বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট ধারণা নেই এবং এর জেরে কাউকে হয়রানি বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। বরং সাংবাদিকরা নিয়মিত তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, মিডিয়াকে জনগণের কণ্ঠস্বর হয়ে কাজ করতে হবে এবং পুরনো ভুলগুলো স্বীকার করে নতুনভাবে এগিয়ে যেতে হবে। একইসঙ্গে সাংবাদিকদের কপিরাইট ও বেতন সুরক্ষার জন্য নতুন অর্থনৈতিক কাঠামো দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, গত ১৭ বছর এবং বর্তমানে গণমাধ্যমের অবস্থা স্পষ্টভাবে ভিন্ন। আগে সমালোচনার সুযোগ ছিল না, মামলা ও হয়রানির শিকার হতেন সাংবাদিকরা। কিন্তু এখন তারা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারছেন, যা স্বাধীনতার পরিচায়ক।
পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, গণমাধ্যমের সহায়তা ছাড়া ফ্যাসিবাদ টিকে থাকতে পারত না। তাই গণমাধ্যমকে অবশ্যই সংস্কার করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত গণমাধ্যম চাই’-এর আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিন শিশির এবং প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুখপাত্র প্লাবন তারিক। সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, এটিএন বাংলার প্রধান প্রতিবেদক একরামুল হক সায়েম প্রমুখ।