টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সম্ভাবনা
বাংলাদেশের একটি আদালত আজ রোববার (১৩ এপ্রিল, ২০২৫) যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে বলে জানা গেছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। টিউলিপ, যিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি, তার বিরুদ্ধে রাজধানীর পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই মামলার চার্জশিট গত সপ্তাহে জমা দেওয়া হয়েছে, এবং আজ ঢাকার একটি আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
অভিযোগের বিস্তারিত
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার প্রভাব খাটিয়ে পূর্বাচলে নিজের মা শেখ রেহানা, ভাই রেদওয়ান ববি সিদ্দিক এবং বোন আজমিনা সিদ্দিকের জন্য প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। এই অভিযোগের সঙ্গে আরও ১৫ জনের নাম জড়িত, যাদের মধ্যে শেখ হাসিনার পরিবারের ছয়জন সদস্য রয়েছেন। এছাড়া, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৩.৯ বিলিয়ন ই�Pandora Papersউরো আত্মসাতের অভিযোগও টিউলিপের বিরুদ্ধে উঠেছে।
এর আগে, লন্ডনে একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে বিতর্কে জড়ান টিউলিপ। ২০২২ সালে তিনি দাবি করেছিলেন, ২০০৪ সালে তার বাবা-মা তাকে ওই ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে জানা যায়, ফ্ল্যাটটি আওয়ামী লীগের একজন নেতার দেওয়া। এই বিতর্কের জেরে তিনি যুক্তরাজ্যের নগর মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
সম্ভাব্য ফলাফল
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে টিউলিপ সিদ্দিক বিদেশি মামলায় পলাতক আসামি হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন, যিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার তাকে বিচারের জন্য যুক্তরাজ্যের কাছে প্রত্যর্পণের দাবি জানাতে পারে। তবে, টিউলিপ তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এর আগে তিনি এসব অভিযোগের স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন।
পটভূমি
৪২ বছর বয়সী টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। তিনি ২০১৫ সাল থেকে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে লেবার পার্টির সংসদ সদস্য। শেখ হাসিনার শাসনামলে তিনি যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, যার মধ্যে ট্রেজারির অর্থনৈতিক সেক্রেটারি এবং সিটি মন্ত্রীর পদ অন্যতম। তবে, তার বিরুদ্ধে উঠা একের পর এক অভিযোগ তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে প্রশ্নচিহ্ন তুলেছে।
প্রতিক্রিয়া ও তদন্ত
টিউলিপ সিদ্দিক এর আগে জানিয়েছিলেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি এবং তার বিরু�d্ধে উঠা অভিযোগের স্বাধীন তদন্তে তিনি সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদের কর্মকর্তারা তার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং তাকে অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন। বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
পূর্বাচলের প্লট বরাদ্দ নিয়ে এই মামলা শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা বৃহত্তর তদন্তের একটি অংশ। এই ঘটনা বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আদালতের আজকের সিদ্ধান্ত এই মামলার ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সূত্র: ডেইলি মেইল