অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার বিপদ: শরীরে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে
আমরা সবাই জানি, কার্বোহাইড্রেট শরীরের প্রধান জ্বালানি। শক্তির জন্য এটি অপরিহার্য হলেও অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ শরীরের জন্য হতে পারে বিপজ্জনক। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটে, যেগুলো খুব সূক্ষ্ম হওয়ায় অনেক সময় আমরা তা ধরতেই পারি না। তাই খাবারের তালিকা ঠিক করার সময় সতর্ক থাকা জরুরি। নিচে অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার চারটি লক্ষণ তুলে ধরা হলো, যা সচেতনতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।
প্রথমত, খাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আবার ক্ষুধা লাগা। যদি আপনি প্রায়ই খাওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই ক্ষুধা অনুভব করেন, তবে এর পেছনে কার্বোহাইড্রেট দায়ী হতে পারে। ২০১৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সাদা ভাত বা রুটি জাতীয় সাধারণ কার্বোহাইড্রেট দ্রুত হজম হয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়িয়ে দেয়, পরে আবার দ্রুত নামিয়ে আনে, ফলে ক্ষুধা বেড়ে যায়। এই সমস্যা এড়াতে খাবারে ফাইবার ও প্রোটিন যুক্ত করুন।
দ্বিতীয়ত, শক্তি হ্রাস পাওয়া বা ক্লান্তি অনুভব। কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার পর যদি আপনি হঠাৎ করেই ক্লান্ত বা শক্তিহীন বোধ করেন, তবে এটি রক্তে শর্করার ওঠানামার একটি প্রভাব হতে পারে। যখন শরীরে দ্রুত শর্করা বাড়ে এবং হঠাৎ করে কমে যায়, তখন শরীরও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ফাইবার ও প্রোটিনযুক্ত খাবার এই সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক।
তৃতীয়ত, হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি। ময়দা, সাদা ভাত বা চিনিযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া হলে শরীর প্রয়োজনের অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট চর্বি হিসেবে জমা করে। ২০২৩ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন না, তাদের ক্ষেত্রে এই জমে থাকা চর্বি দ্রুত ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তাই এ ধরনের খাবার খেয়ে অলসভাবে শুয়ে-বসে থাকা থেকে বিরত থাকুন।
চতুর্থত, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা। নিয়মিত স্কিন কেয়ার করার পরও যদি ত্বক ফেটে যায়, ব্রণ ওঠে বা মলিন দেখায়, তবে আপনার খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর দিন। অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট ও চিনি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায় এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে। এর ফলস্বরূপ ত্বকে দেখা দেয় নানা সমস্যা।
সুতরাং, কার্বোহাইড্রেট শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় হলেও অতিরিক্ত গ্রহণ কখনোই স্বাস্থ্যকর নয়। ভারসাম্য বজায় রেখে প্রাকৃতিক ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করাই ভালো।