১২ দিনের সংঘাত শেষে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি, নেতানিয়াহুর দাবি নিয়ে সংশয়
টানা ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাত শেষে কার্যকর হয়েছে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি। তবে যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক দাবি। তিনি বলেছেন, “ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে”—যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে খোদ ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ও সরকারের অভ্যন্তরীণ সূত্র।
নেতানিয়াহু দাবি করেন, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক অভিযানে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। তার ভাষায়, এই অস্ত্রভাণ্ডার ছিল “ইসরায়েল ধ্বংসের জন্য প্রস্তুত করা”। তিনি এই হামলাকে “সম্পূর্ণ বিজয়” বলেও অভিহিত করেছেন।
কিন্তু ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কিছু অংশ ধ্বংস হলেও, কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। এই মন্তব্য নেতানিয়াহুর দাবি নিয়ে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান এমন বহু কেন্দ্র গোপন রেখেছে, যা একযোগে পুরোপুরি ধ্বংস করা কঠিন।
এদিকে ইরান-ইসরায়েল সরাসরি সংঘর্ষ আপাতত বন্ধ হলেও ইসরায়েল গাজায় তাদের হামলা জোরদার করেছে। নেতানিয়াহুর দৃষ্টি এখন আবার ফিলিস্তিনের দিকে ফিরেছে বলে জানিয়েছেন সেনা কর্মকর্তারা। সংঘাত চলাকালীন গাজা অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৮৬০ জন ফিলিস্তিনি। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এই সংখ্যাটি ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে, এবং গাজায় মানবিক বিপর্যয় গভীরতর হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের ওপর হামলা করে সাময়িক কৌশলগত সুবিধা পেলেও, পারমাণবিক ইস্যু এখনও অনির্ধারিত রয়ে গেছে। পাশাপাশি ফিলিস্তিনে চলমান আগ্রাসন পুরো অঞ্চলেই দীর্ঘমেয়াদি শান্তির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সূত্র: আল জাজিরা, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম