পাপুয়ায় সেনা অভিযানে ১৮ বিদ্রোহী নিহত, বেসামরিক প্রাণহানিও ঘটেছে
ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় পাপুয়া রাজ্যে সেনা অভিযান চালিয়ে অন্তত ১৮ জন বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। একই অভিযানে তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন এক সরকারি কর্মকর্তা।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ক্রিস্টোমেই সিয়ানতুরি জানান, বুধবারের এই অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, অ্যাসল্ট রাইফেল, তীর-ধনুক এবং স্থানীয়ভাবে তৈরি অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য হতাহত হয়নি বলেও জানান তিনি।
তবে এই ঘটনার ব্যাপারে মন্তব্য জানার জন্য বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
স্থানীয় একটি খ্রিস্টান সংগঠন জানায়, বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর গোলাগুলির সময় অন্তত তিনজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন বলে তাদের কাছে গির্জার মাধ্যমে তথ্য এসেছে। সংঘর্ষের এলাকা থেকে প্রায় ১ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সংগঠনটির পাপুয়া শাখার প্রধান রোনাল্ড রিচার্ড বলেন, গ্রামবাসীরা যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখনই এই হামলা হয়। তিনি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেন, সহিংসতা এক ধরনের চক্রে পরিণত হয়েছে। এসময় তিনি উল্লেখ করেন, গুলিতে আহত এক শিশুর কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যদিও কোন পক্ষের গুলিতে তা হয়েছে তা নিশ্চিত নয়।
পাপুয়া অঞ্চলটি পাপুয়া নিউ গিনির সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে নেয়। ১৯৬৯ সালে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত একটি বিতর্কিত গণভোটের মাধ্যমে অঞ্চলটি ইন্দোনেশিয়ার অধীনে আসে। অনেকেই সেই ভোটকে অবৈধ বলে মনে করেন। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এই অঞ্চলটি স্বাধীনতার দাবিতে দশকের পর দশক ধরে আন্দোলন করে আসছে।
বিদ্রোহীরা অতীতে বেশ কিছু বিদেশিকে জিম্মি করেছিল। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালে তারা ২৬ জন বন্যপ্রাণী গবেষককে আটক করে। এছাড়া ২০২৩ সালে মুক্তি পায় প্রায় ১৯ মাস ধরে জিম্মি থাকা নিউজিল্যান্ডের এক পাইলট।
গত মাসেও বিদ্রোহীরা অন্তত ১৭ জনকে হত্যার দাবি করেছিল। তারা জানায়, নিহতরা আসলে সেনাসদস্য, যারা স্বর্ণ খনির শ্রমিকের ছদ্মবেশে এলাকাটিতে অবস্থান করছিলেন।
সূত্র: রয়টার্স