পাক-ভারত উত্তেজনা প্রশমনে ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ
পাকিস্তান-ভারত সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে টেলিফোনে কথা বলেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও। শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠিত এ ফোনালাপে রুবিও দুই দেশের উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়ে গঠনমূলক সংলাপের জন্য একটি কার্যকর পথ অনুসন্ধানের কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, দুই দেশ যদি সংঘাত পরিহার করে আলোচনায় বসতে সম্মত হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
এই তথ্য নিশ্চিত করে এক বিবৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস। এর আগে, রুবিও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রাহ্মনিয়াম জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গেও টেলিফোনে কথা বলেন। ওই ফোনালাপেও তিনি দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা প্রশমনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে, দুই দেশের চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও বর্তমান সংকটের দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। তিনি চান, দুই দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসুক।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় একদল সন্ত্রাসীর হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। নিহতরা সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এ ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেয়, যার মধ্যে সিন্ধু নদ চুক্তি পর্যালোচনা ও পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল অন্যতম। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ ভিসা বাতিলের মতো পদক্ষেপ নেয়।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ভারত পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির অঞ্চলে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায়, যাতে ভারতের দাবি অনুযায়ী ৭০ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়। তবে পাকিস্তান জানিয়েছে, সেখানে নিহত হয়েছে ৩১ জন এবং আহত হয়েছে ৫৭ জন। এর জবাবে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ শুরু করে, যার অর্থ ‘সীসার প্রাচীর’। দুই দেশের সামরিক কর্মকাণ্ডে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা আরও বাড়ছে, যা আন্তর্জাতিক মহলের গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।