৪৪তম বিসিএসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের পদসংখ্যা বৃদ্ধির দাবি চাকরি প্রত্যাশীদের
৪৪তম বিসিএসের সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে পদসংখ্যা বৃদ্ধি করার দাবিতে আবেদন জানিয়েছে চাকরি প্রত্যাশীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক বরাবর একটি লিখিত আবেদন জমা দেন।
আবেদনপত্রে বলা হয়, চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সরকারি দপ্তরগুলোতে শূন্য পদে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার কথা বলা হলেও এখনো শিক্ষাখাতে সেই কার্যক্রম গতি পায়নি। বর্তমান সময়েও সরকারি কলেজগুলোতে তীব্র শিক্ষক সংকট রয়েছে, যা দেশের গণমাধ্যমেও আলোচিত হয়েছে। গত বছরের ২ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৪ লাখ ৭৩ হাজার শূন্য পদ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কর্মকাণ্ড জানতে চেয়েছিল।
শিক্ষা ক্ষেত্রে এই শিক্ষক সংকট টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-৪ বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যানবেইস-এর তথ্যমতে, ২০২৩ সালে সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১:৯৭, যা শিক্ষার মান নিশ্চিতের জন্য চরমভাবে অপ্রতুল। অথচ ৪৩তম বিসিএস পর্যন্ত শিক্ষা ক্যাডারে যে পরিমাণ পদ ছিল, ৪৪তম বিসিএসে তা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৪০, ৪১ ও ৪৩তম বিসিএসে যথাক্রমে ৬০, ৬২ ও ৫৪টি পদ থাকলেও ৪৪তম বিসিএসে তা কমে হয়েছে মাত্র ৩৩টি।
একইভাবে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ইতিহাস, ব্যবস্থাপনা, পদার্থবিদ্যা, ইসলামি শিক্ষাসহ অন্যান্য বিষয়ে ৪৩তম বিসিএসে ছিল যথাক্রমে ৫৪, ৬৪, ৫৪, ৪৪, ৬১, ৪৫ ও ১৭টি পদ; যা ৪৪তম বিসিএসে নেমে এসেছে ২৯, ২৮, ১৮, ২৮, ২৮, ১৬ ও মাত্র ৩টিতে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং একইসঙ্গে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত শূন্য পদ পূরণের কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে না, যার ফলে বেকার সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে এবং দারিদ্র্য নিরসন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।
প্রার্থীরা জানান, ৪৪তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রায় চার বছর পার হয়ে গেলেও এখনো নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি। এক বছরের মধ্যে নিয়োগ শেষ করার ঘোষণা থাকলেও দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। ফলে তারা দীর্ঘ সময় ধরে বেকার অবস্থায় রয়েছেন।
চাকরি প্রত্যাশীরা চলমান ৪৪তম বিসিএসের সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে পদসংখ্যা বাড়িয়ে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে সুপারিশপত্র পাঠানোর দাবি জানান।
আবেদন গ্রহণের সময় মাউশি মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান আবেদনকারীদের পরামর্শ দেন বিষয়টি শিক্ষা উপদেষ্টা এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার। তিনি বলেন, বিষয়টি তার হাতে নেই, তবে সরকার চাইলে তিনি আন্তরিকভাবে কাজ করবেন।