পেহেলগাম হামলার পর উত্তেজনা তুঙ্গে, মোদির সঙ্গে নিরাপত্তা উপদেষ্টার জরুরি বৈঠক
জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভাল। মঙ্গলবার সকালে নয়াদিল্লিতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো। ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে এই বৈঠকে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান সংকট মোকাবিলায় দেশটির সব রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ‘মক ড্রিল’ আয়োজনের—বেসামরিক প্রতিরক্ষার প্রস্তুতি পর্যালোচনার লক্ষ্যে। এটি ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো এমন পদক্ষেপ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, সিডিএস জেনারেল অনিল চৌহান এবং তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে পাকিস্তানের নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়্যবার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।
এক পূর্ববর্তী বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীকে অভিযানের ধরন, লক্ষ্যবস্তু ও সময় নির্ধারণে পূর্ণ স্বাধীনতা দেন। এই নির্দেশনার পর থেকেই সম্ভাব্য অভিযানের গুঞ্জন তীব্রতর হয়।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিক নিহত হন, যা ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর ভারতের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ভারতের অভিযোগ, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ও ডিপ স্টেটের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। যদিও পাকিস্তান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
হামলার পরপরই ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ধরনের ভিসা বাতিল করে এবং ৬৫ বছর পুরোনো সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে। এই চুক্তির আওতায় পাকিস্তানের কৃষিজমির প্রায় ৮০ শতাংশ সেচ ব্যবস্থা সিন্ধু ও এর উপনদীর পানির ওপর নির্ভরশীল। চুক্তি স্থগিত করায় ভারত ইতোমধ্যেই নতুন জলাধার ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ শুরু করেছে।
নয়াদিল্লির পাল্টা পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও ভারতের সঙ্গে ভিসা ও ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তি স্থগিত করে। একই সঙ্গে ইসলামাবাদ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সিন্ধু চুক্তি বাতিল যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে। এ অবস্থায় দুই দেশই সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভয়াবহ সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়ছে।