কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে, পুরোনো বক্তব্য ঘিরে নতুন বিতর্ক
কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। এই উত্তেজনা এখন সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কাও তৈরি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের দেওয়া একটি পুরোনো বক্তব্য ঘিরে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
১৭ এপ্রিল ইসলামাবাদে প্রবাসীদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, “আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের থেকে আলাদা।” কাশ্মীরকে পাকিস্তানের “জীবন সঞ্চারণী শিরা” হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কাশ্মীরিদের বীরোচিত লড়াইকে পাকিস্তান কখনও পরিত্যাগ করবে না।” এই বক্তব্যের পাঁচ দিন পর, ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক।
হামলার ঘটনার পর ভারতীয় গণমাধ্যম ও বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে আসিম মুনিরের বক্তব্যকে পেহেলগামের হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চলছে। যদিও এ নিয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ এখনো উপস্থাপন করা হয়নি, তবে তার বক্তব্যের আগ্রাসী সুর ভারতে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
এদিকে পাক সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা কোনো ধরনের আগ্রাসন শুরু করতে চায় না, তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র বলেন, “আমরা দায়িত্বশীল রাষ্ট্র। যুক্তি ও গঠনমূলক পথ অনুসরণ করবো। তবে যদি কেউ মনে করে আগ্রাসনই পথ, তাহলে আমাদের বার্তা স্পষ্ট— আমাদের পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করো না।” তিনি জানান, সশস্ত্র বাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীসহ প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলো পূর্ণ প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে।
মার্কিন জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশ্লেষক জশুয়া টি হোয়াইট বলেন, “আসিম মুনিরের বক্তব্য কেবল রুটিন আদর্শিক অবস্থান নয়। এটি পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মিল থাকলেও হিন্দু-মুসলিম বিভেদকে যে সুরে তুলে ধরা হয়েছে, তা পরিস্থিতিকে আরও উসকে দিতে পারে।”
উভয় দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। এখন দেখার বিষয়, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও সংলাপের মাধ্যমে এই উত্তেজনা প্রশমিত হয় কি না।