তেতো স্বাদের করলায় লুকিয়ে আছে অসাধারণ উপকারিতা
করলার নাম শুনলেই আমাদের অনেকের মুখ বেঁকে যায় এর তেতো স্বাদের কথা ভেবে। এই কারণে অনেকেই এটি এড়িয়ে চলেন। অথচ আমাদের মা-বাবা কেন আমাদের করলা খেতে জোর করেন, তার পেছনে রয়েছে এর অসাধারণ পুষ্টিগুণ। যারা করলা খাওয়া অভ্যাসে পরিণত করেছেন, তারা বলেন—প্রথমে তেতো লাগলেও ধীরে ধীরে এর স্বাদ মুখে লেগে যায়। আর এর উপকারিতাগুলো জানলে আপনি নিজেই করলাকে খাদ্যতালিকায় রাখতে আগ্রহী হবেন।
ওজন কমাতে করলা অত্যন্ত উপযোগী। এতে ক্যালোরি কম, চর্বি কম এবং কার্বোহাইড্রেটও খুবই সীমিত পরিমাণে থাকে, যা ওজন কমানোর ডায়েটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই যারা ওজন কমাতে চান বা তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের জন্য করলা হতে পারে উপযুক্ত সবজি।
করলায় রয়েছে প্রচুর আঁশ, যা হজমের জন্য খুবই সহায়ক। এটি মল সহজে গঠন করে এবং খাবার হজম ও শোষণ প্রক্রিয়াকে মসৃণ করে তোলে। করলা খাওয়ার পর পেট ফাঁপা বা ভারী মনে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তাই সহজ হজমের জন্য করলাকে সবজির তালিকায় রাখা যেতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য করলা এক বিশেষ উপকারি সবজি। ইউএসডিএ-র তথ্য অনুযায়ী, ১০০ গ্রাম করলায় মাত্র ১৩ মিলিগ্রাম সোডিয়াম এবং ৬০২ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে। এতে থাকা ‘পি-ইনসুলিন’ নামে একটি উদ্ভিদ-ভিত্তিক ইনসুলিন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
করলার প্রদাহ বিরোধী গুণ ও ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং নানা ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। সুস্থ থাকতে চাইলে করলাকে নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করা যেতে পারে।
এছাড়া ত্বক ও চুলের যত্নেও করলা কার্যকর। এতে থাকা আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও অন্যান্য খনিজ উপাদান ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ব্রণ প্রতিরোধ করে। নিয়মিত করলার রস পান করলে ত্বক পরিষ্কার থাকে বলেও অনেকে জানান।
তেতো হলেও করলার স্বাস্থ্য উপকারিতা এতটাই বিস্তৃত যে, তা উপেক্ষা করা কঠিন। তাই তিতকুটে স্বাদকে পাশ কাটিয়ে এর গুণাগুণকে প্রাধান্য দিন। আপনার স্বাস্থ্য উপকারিতাই প্রমাণ করে, করলা খাওয়া মোটেও অবহেলার জিনিস নয়।
আপনি কি করলা খেতে পছন্দ করেন, নাকি এখনও তেতোর ভয়ে দূরে থাকেন?