২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে রোববার ১ ডিসেম্বর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে ২১ নভেম্বর মামলায় খালাস চেয়ে করা আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়। প্রায় ছয় বছর আগে বিচারিক আদালতের রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল-জেল আপিলের শুনানি শুরু হয়। নতুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের অধীনে বেঞ্চ পুনর্গঠনের পর মামলাটি বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চে আসে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত এবং অসংখ্য ব্যক্তি আহত হন। আওয়ামী লীগ এ হামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দেয়। পরদিন মতিঝিল থানায় মামলা হয়, যা পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার হাত ঘুরে সিআইডি তদন্ত করে। ২০০৮ সালে প্রথম অভিযোগপত্র দেওয়া হয়, যেখানে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার অধিকতর তদন্ত করে ২০১১ সালে বিএনপি নেতা তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জনকে আসামির তালিকায় যুক্ত করে।
অন্যদিকে, জনাব তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর বরাবরই নিজেদেরকে নির্দোষ দাবি করে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ পরিপূর্ণভাবে মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে, ফ্যাসিবাদী কায়দায় বিরোধীমতের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দমন কর্মসূচির একটা পরিকল্পিত এজেন্ডা ছাড়া অন্য কিছু নয়৷
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত এ মামলার রায়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এছাড়া ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সেই রায় হাইকোর্টে আপিল ও ডেথ রেফারেন্সে আসে, যা রোববারের রায়ে বাতিল ঘোষণা করা হলো। আদালত এ মামলাকে অবৈধ বলে উল্লেখ করেছেন।