বাংলাদেশ সরকার সীমান্ত ইস্যুতে ২০১০ সালে ভারতের সঙ্গে গোপনে সই করা চুক্তি বাতিল করার জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, সীমান্তে অবৈধ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য ২০১০ সালে শেখ হাসিনার সরকার ভারতের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছিল, যার ফলে এই চুক্তিগুলো বাস্তবায়িত হতে থাকে।
এ সময় তিনি আরও জানান, ২০১০ সালে শুরু হওয়া কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ কার্যক্রম এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তে সম্পন্ন হয়েছে, যা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা থেকে একটি বড় অংশ। এর মধ্যে ৮৮৫ কিলোমিটার বাকি এলাকায় বিএসএফ (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী) অবৈধভাবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, "বাংলাদেশ-ভারত যুগ্ম সীমান্ত নির্দেশাবলী-১৯৭৫ অনুযায়ী, দুই দেশের শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে কোনো প্রতিরক্ষা সংবলিত কাজ সম্পন্ন করতে হলে উভয় পক্ষের সম্মতি নিতে হবে, কিন্তু ভারত এসব নিয়ম ভেঙে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে।"
তিনি আরও বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিজিবির সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কিছু নতুন সরঞ্জাম দেওয়া হবে, যার মধ্যে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল অন্তর্ভুক্ত থাকবে। যদিও বিএসএফ এসব সরঞ্জাম ইতোমধ্যেই ব্যবহার করছে।
এদিকে, শূন্য রেখার ভেতরে অবৈধভাবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কারণে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) যখন বাংলাদেশি বিজিবিকে বাধা দিতে চেষ্টা করছে, তখন তারা ২০১০ সালের শেখ হাসিনা সরকারের চুক্তির রেফারেন্স দিচ্ছে। তবে বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ঘোষণা করা হয়েছে যে, তাদের বাকি ৮৮৫ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রচেষ্টা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ সরকার ভারতকে চিঠি পাঠিয়ে এসব অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করবে।