২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ হিসেবে তার কল রেকর্ড আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের হাতে এসেছে। এই কল রেকর্ডগুলোতে শেখ হাসিনা বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ ও গণহত্যা চালানোর নির্দেশনা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৮ জুলাই শেখ হাসিনা তার উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক সিদ্দিকীর সঙ্গে দুইবার ফোনে কথা বলেন। প্রথমবার ২ মিনিট ১৮ সেকেন্ড এবং দ্বিতীয়বার ১ মিনিট ১৩ সেকেন্ড কথা হয়। এই কথোপকথনে তিনি নিরীহ ও নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে।
জুলাইয়ের শেষদিকে শেখ হাসিনা আরও কয়েকবার প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। তিনি তারেক সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুজিবুর রহমান, এনএসআইয়ের সাবেক প্রধান টি এম জোবায়ের, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাসসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যোগাযোগ করে আন্দোলন দমনের জন্য শক্তি প্রয়োগের নির্দেশনা দেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই কল রেকর্ডগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছে। প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ জানিয়েছেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া এই কল রেকর্ডের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ফরেনসিক পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রায় ১,৫০০ ছাত্র-জনতা নিহত হন। এই ঘটনার পর শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তদন্তের অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
তদন্তের এই পর্যায়ে কল রেকর্ডের ফরেনসিক পরীক্ষার ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে, যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা নির্ধারণে সহায়তা করবে।