শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ জন এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ জনসহ ৩৪ আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার, বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। আদালত রায়ে বলেছেন, মামলাটি বিদ্বেষপূর্ণ ছিল এবং বিচারিক আদালত পক্ষপাতিত্ব করেছেন, যার ফলে আসামিরা অব্যাহতি পেয়েছেন।
২০১৯ সালের ৩ জুলাই পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২ জনকে অর্থদণ্ড প্রদান করেছিলেন। এছাড়া মামলায় আরও ৩০ জন আসামি অভিযোগের সম্মুখীন হলেও তাদের বিচার এখনও চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে মামলার ৫ জন আসামি মারা গেছেন।
এই মামলার প্রেক্ষাপট ছিল ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর, যখন শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। ওই দিন তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি দলীয় কর্মসূচি নিয়ে ট্রেন মার্চ করেছিলেন। ট্রেনটি ঈশ্বরদী স্টেশনে পৌঁছানোর পর শেখ হাসিনার ওপর হামলা চালানো হয়, যেখানে তার দিকে গুলি এবং বোমা ছোড়া হয়। ওই ঘটনায় শেখ হাসিনার ওপর হামলা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করা হয়।
এ ঘটনায় শেখ হাসিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তদন্ত শুরু হয়, এবং ওই হামলার সাথে যুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। পাবনা আদালতে বিচার শেষে ২০১৯ সালে ওই মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনের যাবজ্জীবন ও কিছু অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
তবে, হাইকোর্ট রায়ে এই শাস্তি বাতিল করে দেন। আদালত বলেন, বিচারিক আদালত একপেশে এবং পক্ষপাতিত্ব করে রায় দিয়েছেন, যার ফলে আসামিদের খালাস প্রদান করা হলো। এই রায়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সমর্থকরা এই রায় নিয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করছেন।
এমনকি, বিএনপির নেতৃবৃন্দ এই রায়কে দলীয় অবস্থান হিসেবে দাবি করেছেন, তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এটিকে আদালতের স্বাধীনতা ও সঠিক বিচার বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই রায়ের ফলে, ১৯৯৪ সালের ঐতিহাসিক হত্যাচেষ্টা মামলার সঙ্গে জড়িত আসামিরা খালাস পেয়েছেন, যা এই মামলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।