ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সা'আর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছেন যে, ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের বিরুদ্ধে তাদের সামরিক অভিযানে কোনো লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়নি। ইসরায়েলি টিভি চ্যানেল-১২-এর বরাতে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, গিদিওন সা'আর তার বক্তব্যে বলেন, "জিম্মিদের মুক্তি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কিন্তু কয়েক মাস ধরে আমরা একজন জিম্মিকেও জীবিত ফেরত আনতে পারিনি। এছাড়া হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের কোনো কৌশলগত লক্ষ্য পূরণ হয়নি।"
এদিকে, ইসরায়েলি শিক্ষামন্ত্রী ইয়াভ কিশ গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তি নিয়ে বলেন, "এই চুক্তি করতে গিয়ে আমাদের বড় ধরনের মূল্য দিতে হয়েছে।"
ইসরায়েলি নৌবাহিনীর সাবেক কমান্ডার ইয়েদিদিয়া ইয়াঅরি এটিকে ইসরায়েলের জন্য "সম্পূর্ণ পরাজয়" বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, "গাজার যুদ্ধ শেষ হবে, কিন্তু এর পরবর্তী অধ্যায় হবে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক ও বিচারিক অস্থিরতার এক সুনামি, যা বড় ধরনের বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে।"
গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি ঘোষণা করে। এই চুক্তি অনুযায়ী, রবিবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। চুক্তির অংশ হিসেবে হামাস ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের ধাপে ধাপে মুক্তি দিতে সম্মত হয়।
চুক্তির অন্যতম শর্ত হলো, ইসরায়েলকে গাজা উপত্যকা থেকে সরে যেতে হবে। রবিবার বিকেলে চুক্তি অনুযায়ী, হামাস তিন নারী ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে এবং এর বিপরীতে তেল আবিব ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।
হামাস আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৬৯ জন নারী এবং ২১ জন কিশোর রয়েছে, যাদের বেশিরভাগই পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমের বাসিন্দা। মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য খান ইউনিস হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে, চুক্তির আওতায় ইসরায়েল প্রতিটি জিম্মির বিনিময়ে ৩০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে। এটি উভয় পক্ষের জন্য একটি কৌশলগত এবং মানবিক সিদ্ধান্ত হলেও চুক্তিটি ইসরায়েলি নেতাদের জন্য বড় ধরনের সমালোচনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।