হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে কুয়েটে বিক্ষোভ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
আজ দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ মিছিল ডক্টর এস এম রশিদ হল, শহীদ স্মৃতি হল, ফজলুল হক হল, একুশে হল, খান জাহান আলী হলসহ বিভিন্ন আবাসিক হলের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, যার মধ্যে ছিল—‘ছাত্র রাজনীতির কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ছাত্র রাজনীতির দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘বিএনপির দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’ এবং ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস একসাথে চলে না’।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, হামলার চার দিন পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি তৈরি করেছে। ক্যাম্পাসের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে, অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, হামলাকারীদের চিহ্নিত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়া হয়েছে, এমনকি হামলার দৃশ্য আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। তবুও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে ফিরতে চাই। প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানাচ্ছি, যেন তিনি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করেন।”
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পরে স্থানীয় কিছু বহিরাগত এই হামলায় অংশ নেয়।
সেদিন রাতেই শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
বুধবার বেলা একটার মধ্যে দাবিগুলো পূরণের সময়সীমা বেঁধে দেন তারা এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বুধবার রাতে খান জাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
তবে শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, তাদের দাবিগুলো ‘পুরোপুরি মেনে নেওয়া হয়নি’। এ কারণে উপাচার্যকে বর্জনের ঘোষণা দেন তারা, পাশাপাশি সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালককেও বর্জনের ডাক দেন।
এরপর শুক্রবার রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং একপর্যায়ে বাসভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।