বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান সেনাসদস্যদের পেশাদারিত্ব বজায় রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যতদিন পর্যন্ত দেশে একটি নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণ না করে, ততদিন সেনাবাহিনীকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয় বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সাভার সেনানিবাসের ফায়ারিং রেঞ্জে আয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফায়ারিং প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেনাপ্রধান বলেন, “দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম, এই কাজটি দ্রুত শেষ করে সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবো। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তাই ধৈর্য হারানো যাবে না, বরং প্রফেশনালিজমের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করতে হবে।"
তিনি সেনাসদস্যদের উদ্দেশে বলেন, “ডিপ্লয়মেন্ট চলাকালে আমাদের অত্যন্ত সংযত আচরণ করতে হবে। কোনও ধরনের উচ্ছৃঙ্খল কাজ করা যাবে না। বল প্রয়োগের ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব সংযত থাকা জরুরি। যদিও পরিস্থিতির কারণে কখনও বল প্রয়োগ করতে হয়, তা যেন প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত না হয়। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে ইনশাআল্লাহ দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”
এদিকে, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের ৯ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ফায়ারিং প্রতিযোগিতায় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ফরমেশন, লজিস্টিকস এরিয়া, পাঁচটি স্বতন্ত্র ব্রিগেড এবং প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডসহ মোট ১৭টি দল অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় ৩৩ পদাতিক ডিভিশন চ্যাম্পিয়ন এবং ৭ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেড রানারআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
ব্যক্তিগত ক্যাটাগরিতে ১১ পদাতিক ডিভিশনের সৈনিক মো. রাজু সরদার শ্রেষ্ঠ ফায়ারার নির্বাচিত হন, ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেডের সৈনিক মো. জুবায়ের আলী দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন এবং ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের লেফটেন্যান্ট সামিয়া রহমান শ্রেষ্ঠ নারী ফায়ারার হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন।
সিএএস ট্রফি ফায়ারিং প্রতিযোগিতা-২০২৪-এর মাইনর ইউনিট ক্যাটাগরিতে অ্যাডহক ৪৭ মর্টার রেজিমেন্ট আর্টিলারি চ্যাম্পিয়ন এবং সদর দপ্তর ১০৫ পদাতিক ব্রিগেড রানারআপ হয়। মেজর ইউনিট ক্যাটাগরিতে ১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট চ্যাম্পিয়ন এবং ২৯ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট রানারআপ হয়।
সেনাপ্রধান বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সেনাসদস্যদের প্রশংসা করেন। তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনী সবসময় দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে। অনুষ্ঠানে সেনা কর্মকর্তা, সেনাসদস্য এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।