সিরিয়ার বিদ্রোহীরা চারটি নতুন শহর দখল করেছে, যার ফলে তারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় শহর হামার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সংঘর্ষে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী কিছু অঞ্চল পুনরুদ্ধার করলেও তারা নতুন করে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) ফ্রান্স টুয়েন্টিফোরের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিদ্রোহীদের অগ্রগতির ফলে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার আরও চাপের মুখে পড়েছে। এই পরিস্থিতি তাদের সামরিক এবং কূটনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান, যিনি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর প্রধান সমর্থক হিসেবে পরিচিত, সিরিয়ার সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগে একটি প্রকৃত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় জড়িত হতে হবে। এরদোগানের এই মন্তব্য বিদ্রোহীদের প্রতি তুরস্কের দীর্ঘদিনের সমর্থনের একটি উদাহরণ।
বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দিচ্ছে সালাফি জিহাদি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম, যারা তুরস্ক-সমর্থিত বিরোধী যোদ্ধাদের সঙ্গে একত্রে কাজ করছে। এই যৌথ আক্রমণের ফলে বিদ্রোহীরা এখন সিরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর হামার মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। হামা, যা সিরিয়ার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে গেলে আসাদের জন্য কৌশলগত দিক থেকে বড় ক্ষতি হবে।
গত কয়েকদিনে বিদ্রোহীরা আলেপ্পো শহরের উত্তরাঞ্চলের বড় অংশ এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলের শহর ও গ্রামগুলো দখল করেছে। এই অঞ্চলগুলো দীর্ঘদিন ধরে আসাদের সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখন বিদ্রোহীদের এই অগ্রযাত্রা সিরিয়ার সংঘাতকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদ্রোহীদের সাম্প্রতিক সাফল্য আসাদ সরকারের জন্য কেবল সামরিক নয়, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও বড় সংকট তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, এরদোগানের মন্তব্য বিদ্রোহীদের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থনের বিষয়টি আরও স্পষ্ট করেছে।
সিরিয়ার এই সংকটের ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। সংঘর্ষের কারণে হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানালেও যুদ্ধের তীব্রতা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।