ইসরাইলি বিমানবাহিনী সম্প্রতি তাদের পরিচালিত একটি গোপন মিশনের বিস্তারিত প্রকাশ করেছে। অভিযানে সিরিয়ার মাসিয়াফ এলাকায় একটি ভূগর্ভস্থ ইরান-সমর্থিত ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ধ্বংস করা হয়েছে। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর এই মিশন সম্পন্ন হয়, যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন মেনি ওয়েজ’।
ধ্বংস করা কারখানাটি ‘ডিপ লেয়ার’ নামে পরিচিত এবং এটি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উত্পাদন কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। কারখানাটি লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের জন্য সুনির্দিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল। ২০১৭ সালে ইসরাইলি বিমান হামলার পর ইরান তাদের কার্যক্রম ভূগর্ভে স্থানান্তর করে। ৭০ থেকে ১৩০ মিটার গভীর এই কারখানা ২০২১ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ কার্যকর হয়ে ওঠে। এর বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১০০ থেকে ৩০০টি ক্ষেপণাস্ত্র, যা ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
অভিযানে ইসরাইলি বিশেষ বাহিনীর শালডাগ ইউনিট এবং ইউনিট ৬৬৯ অংশ নেয়। চারটি সিএইচ-৫৩ ‘ইয়াসুর’ হেলিকপ্টারে ১০০ জন কমান্ডো এবং ২০ জন মেডিক মিশনে অংশ নেয়। ভূমধ্যসাগরের ওপর দিয়ে উড়ে সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে তারা মাসিয়াফে পৌঁছে। কারখানার প্রবেশপথে ৬৬০ পাউন্ড বিস্ফোরক স্থাপন করা হয়। বিস্ফোরণে কারখানাটি ধ্বংস হয়, যা একটি শক্তিশালী কম্পন সৃষ্টি করে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি, অভিযানে প্রায় ৩০ জন সিরীয় সেনা নিহত হয়। তবে সিরিয়ান মিডিয়া জানিয়েছে, ১৪ জন নিহত এবং ৪৩ জন আহত হয়েছে। এই অভিযানকে ইরানের সামরিক কার্যক্রমে ইসরাইলের নজরদারি ও আক্রমণাত্মক নীতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। মিশনটি ইরান ও সিরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে দুর্বল করার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি