সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের রাশিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি নতুন মোড় নিয়েছে। বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে দামেস্কের পতনের এই ঘটনাটি ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াই করা লেবাননের সশস্ত্র আন্দোলন হিজবুল্লাহর জন্য বড় আঘাত। ইরান থেকে হিজবুল্লাহর কাছে অস্ত্র সরবরাহের প্রধান পথ ছিল সিরিয়া, যা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
হিজবুল্লাহর নতুন প্রধান শেখ নাঈম কাশেম শনিবার প্রথমবারের মতো এ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে, আসাদের শাসন পতনের পর হিজবুল্লাহ সিরিয়ার মধ্য দিয়ে অস্ত্র সরবরাহের পথ হারিয়েছে। তবে তিনি জানান, এটি প্রতিরোধ অক্ষের জন্য দীর্ঘমেয়াদে খুব বড় ক্ষতি হবে না।
নাঈম কাশেম তার বক্তব্যে আসাদের নাম উল্লেখ না করে বলেন, সিরিয়ার নতুন ক্ষমতাসীন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর স্থিতিশীল অবস্থান স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত হিজবুল্লাহ কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সিরিয়া ও লেবাননের জনগণ এবং সরকারগুলোর মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
কাশেম আরও বলেন, "আমরা একটি নতুন পথ খুঁজে বের করতে পারব। সিরিয়া যদি নতুনভাবে শাসিত হয়, তবে হয়তো আবারও অস্ত্র সরবরাহের রুটটি সক্রিয় করা সম্ভব হবে।"
সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানিও ইসরাইলের প্রতি সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি সিরিয়ায় ইসরাইলের সাম্প্রতিক বিমান হামলাকে অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছেন। আল-জোলানি বলেন, "ইসরাইলের এ ধরনের কর্মকাণ্ড পুরো অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধি করছে এবং এটি লাল রেখা অতিক্রম করেছে।"
হিজবুল্লাহ সিরিয়ার আসাদ সরকারের পতন ঠেকাতে ২০১৩ সাল থেকে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেয়। কিন্তু আসাদের পতনের মধ্য দিয়ে তার পরিবারের পাঁচ দশকের ক্ষমতার সমাপ্তি ঘটেছে। নতুন সরকার ইসরাইলের প্রতি কী অবস্থান নেবে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হিজবুল্লাহপ্রধান।
তিনি বলেন, "আমরা আশা করি নতুন সরকার ইসরাইলকে শত্রু রাষ্ট্র হিসেবে দেখবে এবং তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না।"
আসাদের উৎখাত এবং সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর উত্থান মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।