নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছেন। এই সংঘর্ষের মূল কারণ ছিল আদমজী ইপিজেডের ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে আদমজী ইপিজেডের ইউনিভার্সেল নামে একটি গার্মেন্টসে বিএনপি নেতা রুহুল আমিন ঝুট নামাতে গেলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর ও তাঁর সমর্থকরা তাকে বাধা দেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি এবং পরে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবর্ষণ, মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের মোট ১০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া, সংঘর্ষের সময় ৬টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং কয়েকটি দোকানে আগুন দেওয়া হয়।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহিনূর আলম জানান, ইপিজেডের ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত ও মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। পরে সেনাবাহিনী এবং অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
এটি প্রথমবার নয় যে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। এর আগে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার জঙ্গলপট্টি গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যেখানে উভয় পক্ষের চারজন আহত হয়।
এছাড়া, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করা হয়েছিল। সেখানে একজনকে মারধরের পর সংঘর্ষ বাঁধে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জের সংঘর্ষের ঘটনাটি বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের একটি উদাহরণ, যা স্থানীয় ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ সংহতি ও শৃঙ্খলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপের ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় ও সংলাপ বাড়ানো জরুরি।