সার্বিয়ার পার্লামেন্ট অধিবেশন চলাকালে বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা স্মোক গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছেন। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) এই নাটকীয় ঘটনার পর অধিবেশন কক্ষের ভেতরে তীব্র বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পরিস্থিতির চরম অবনতির মধ্যে সরকারদলীয় এক আইনপ্রণেতা স্ট্রোক করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
গত চার মাস ধরে চলমান ছাত্র আন্দোলন ও সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান জনবিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিরোধী দল এই প্রতিবাদ জানায়। প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুসিচের এক দশকের শাসন এখন বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে। শিক্ষক, কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং সরকারের দুর্নীতি ও ব্যর্থতার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
প্রতিবাদ শুরু হয় তখন, যখন ক্ষমতাসীন সার্বিয়ান প্রগ্রেসিভ পার্টি (এসএনএস) এর নেতৃত্বাধীন জোট পার্লামেন্টে তাদের এজেন্ডা অনুমোদন করে। বিরোধী দলের কয়েকজন সংসদ সদস্য তখন স্পিকারের দিকে এগিয়ে যান, যেখানে নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হয়।
এ সময় উত্তেজিত কয়েকজন সংসদ সদস্য স্মোক গ্রেনেড এবং কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে মারেন। মুহূর্তের মধ্যেই কালো ও গোলাপি ধোঁয়ায় ভরে যায় পুরো অধিবেশন কক্ষ। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে অনেকে শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকেন।
স্পিকার আনা ব্রনাবিচ জানান, এই হামলায় দুইজন সংসদ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে এসএনএস পার্টির আইনপ্রণেতা জেসমিনা ওব্রাদোভিচ স্ট্রোক করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বিরোধীদলীয় সদস্যদের এমন তীব্র প্রতিবাদের পরও স্পিকার বলেন, "সার্বিয়ার গণতন্ত্র রক্ষার জন্য পার্লামেন্ট তার কাজ চালিয়ে যাবে।"
স্মোক গ্রেনেড বিস্ফোরণের পর অধিবেশন সাময়িকভাবে মুলতবি করা হলেও পরে তা পুনরায় শুরু হয়। তবে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা আলোচনা ব্যাহত করতে বাঁশি বাজিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন, যাতে ক্ষমতাসীন দল বক্তব্য দিতে না পারে। ফলে পুরো অধিবেশন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সরকারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া এই রাজনৈতিক অস্থিরতা এখন পার্লামেন্টের ভেতরেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সংঘাত ক্রমেই আরও তীব্র হতে পারে এবং প্রেসিডেন্ট ভুসিচের সরকারকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।