সব হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনা: গোলাম পরওয়ার
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার শেখ হাসিনাকে দেশের সব হত্যাকাণ্ডের “মাস্টারমাইন্ড” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, এই খুনি মাস্টারমাইন্ডকে রাজনীতিতে ফেরানোর জন্য যারা চেষ্টা করছেন, তাদের প্রতি ধিক্কার জানাই। তিনি আরও দাবি করেন, শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে তার বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবিতে ‘গণহত্যার ন্যায় বিচার ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা আন্দোলন’ আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। তিনি হাসিনার শাসনামলে ঘটে যাওয়া গুম, খুন এবং নির্যাতনের নানা ঘটনা তুলে ধরেন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন হাসিনার শাসনামলে গুম-খুন ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা। নেক্সাস ডিফেন্স এন্ড জাস্টিজ-এর প্রধান নির্বাহী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ হাসান নাসিরের সভাপতিত্বে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গোলাম পরওয়ার তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠার তাণ্ডব, ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ড, ২০১০ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের নামে বিচারিক হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যা, আল্লামা সাঈদীর রায়ের পর গণহত্যা, ২০১৩ সালের গণঅভ্যুত্থানে রাজপথে ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা, এবং ক্রসফায়ারে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের পিছনে শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল।
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা এত নিষ্ঠুর এবং ফ্যাসিস্ট, যে তার জন্য ‘ফ্যাসিস্ট’ শব্দটি যথেষ্ট নয়। তাকে আমি ‘স্যাডিস্ট’ বলি, কারণ খুন, গুম এবং রক্তপাত দেখে যার পাষাণ হৃদয় একটুও কাপে না, বরং উপভোগ করে, তাকে ইংরেজিতে স্যাডিস্ট বলা হয়।”
পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তার হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে গোলাম পরওয়ার বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশে যত গুম, খুন এবং নির্যাতন হয়েছে, তা সকলের সামনে আনা উচিত এবং এর বিচার করা প্রয়োজন। তিনি আরও দাবি করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী, তাদের চিহ্নিত করতে হবে এবং প্রতিটি সেক্টরে সংস্কার করে তারপর জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ হাসান নাসির বলেন, “আমরা ২০০৬ সাল থেকে গুম, খুন এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার চাইতে এখানে সমবেত হয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “নেক্সাস ডিফেন্স এন্ড জাস্টিজ একটি নির্দলীয় প্রতিষ্ঠান এবং আমরা এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গুম-খুনের শিকার পরিবারগুলোর বিচার দাবি করছি।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, শামীম সাঈদী, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান, শহীদ মেজর তানভীরের স্ত্রী তাসনুভা মাহা, মেজর রেজাউল করিম, মেজর ফিরোজ ইফতেখার ফুয়াদ, লেঃ কর্নেল হাসিনুর রহমান (বীর প্রতীক), এবং গুম ফেরত মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল চৌধুরী প্রমুখ।