অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন—বাংলাদেশে সহমর্মিতা ও সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকলে, জাতি হিসেবে আমরা হতে পারি আরও বেশি সাহসী, স্বনির্ভর ও মানবিক।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত একটি ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ড. ইউনূস বলেন,
“মানুষের পাশে দাঁড়ানো, একে অপরের সহায়তায় এগিয়ে আসা—এগুলো আমাদের জাতিগত শক্তি। এই ধারা যদি আমরা ধরে রাখতে পারি, তাহলে একটি সাহসী ও আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা কোনোভাবেই অসম্ভব নয়।”
বক্তব্যে ড. ইউনূস বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকাকে কৃতজ্ঞতা ও সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন,
“দুর্যোগের মুহূর্তে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তা সত্যিই অনুকরণীয়। বিশেষ করে বন্যার সময় তাদের ভূমিকা ছিল অসামান্য।”
তিনি বলেন, তখনকার বন্যা পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ ছিল, তা অনেকেই বন্যা চলে যাওয়ার পর বুঝতে পেরেছে। অসংখ্য মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, হয়ে পড়েছেন আশ্রয়হীন। সেই সময় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, সেনাবাহিনী ও সাধারণ মানুষ মিলে একটি মানবিক উদ্যোগে শামিল হন।
ড. ইউনূস আরও জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর নির্মাণের বিষয়ে অনেকেই প্রস্তাব দিয়েছিলেন টাকা দিয়ে সহায়তা করার। তবে তিনি অর্থ দেওয়ার বিষয়ে ‘কঠোর অবস্থান’ নিয়েছিলেন।
“শুধু টাকা দিয়ে নয়, আমরা চেয়েছি—এই উদ্যোগে মানুষের মন ও আন্তরিকতা যুক্ত হোক। সহানুভূতির ভিত্তিতে, নিজের শ্রম ও সদিচ্ছার ওপর দাঁড়িয়ে ঘরগুলো নির্মিত হোক—এই চেতনা আরও গুরুত্বপূর্ণ।”
অনুষ্ঠানে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধই একটি জাতির আসল পরিচয়। সবার অংশগ্রহণে একটি মানবিক ও শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ে তোলার পথ আমরা সুদৃঢ় করতে পারি।