সন্তান জন্মালেই নগদ অর্থ দেবে চীন সরকার

চীন বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ হলেও গত কয়েক বছর ধরে নিম্ন জন্মহারের সমস্যায় ভুগছে। এই সংকট মোকাবিলায় এবার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। ঘোষিত নতুন প্রকল্প অনুযায়ী, সন্তান জন্ম দিলে নগদ অর্থ পাবেন চীনা দম্পতিরা।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইট টাইমস জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই নীতিতে বলা হয়েছে—চীনের প্রতিটি দম্পতিকে সন্তান জন্মের পর শিশুটির বয়স তিন বছর না হওয়া পর্যন্ত প্রতি বছর ৩ হাজার ৬০০ ইউয়ান (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৮ হাজার ৪৮৪ টাকা) করে নগদ অর্থ দেওয়া হবে। এ অর্থ সন্তান লালন-পালনের ব্যয় হিসেবে সরকারি অনুদান হিসেবে বিবেচিত হবে।

চীনের বর্তমান জনসংখ্যা ১৪১ কোটিরও বেশি হলেও ২০২৩ সালে তারা বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের তকমা হারায়। বর্তমানে এই তালিকার শীর্ষে আছে ভারত।

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে চীন ১৯৮০’র দশকে এক সন্তান নীতি চালু করেছিল। কিন্তু এর ফলে জন্মহার হ্রাস, লিঙ্গ ভারসাম্যহীনতা, বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মক্ষম মানুষের ঘাটতির মতো দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার উদ্ভব ঘটে। ২০১৬ সালে সেই নীতি বাতিল করে দুই সন্তান নীতি চালু করা হয় এবং ২০২১ সালে তা বাড়িয়ে তিন সন্তান নীতিতে রূপান্তর করা হলেও আশানুরূপ ফল আসেনি।

পরিসংখ্যান বলছে, চীন টানা তিন বছর—২০২২, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে নিম্ন জন্মহারের রেকর্ড করেছে। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে চীনের জনসংখ্যা নেমে আসবে ১৩০ কোটিতে এবং ২১০০ সালের মধ্যে তা আরও কমে ৮০ কোটিতে দাঁড়াবে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে চীন এমন পতন ঠেকাতে জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে এখন জাতীয় অগ্রাধিকারে পরিণত করেছে। সন্তান জন্মদানে উৎসাহ দিতে নগদ অর্থ প্রদান তারই অংশ।