সংসদে দুই কক্ষে আসন হবে ৫০৫, আসছে নতুন রূপরেখা
জাতীয় সংসদকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করার পরিকল্পনা নিয়ে নতুন প্রস্তাব পেশ করতে যাচ্ছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। প্রস্তাব অনুযায়ী, নিম্নকক্ষে থাকবে ৪০০টি আসন, যার মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকবে। অন্যদিকে, উচ্চকক্ষে ১০৫টি আসনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ৫টি আসন রাষ্ট্রপতির মনোনয়ন এবং বাকি ১০০টি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবে। দুই কক্ষ মিলিয়ে সংসদের মোট আসন দাঁড়াবে ৫০৫টিতে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় এবং একনায়কতন্ত্র প্রতিরোধে এই প্রস্তাবনা আনা হচ্ছে। আগামীকাল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
কমিশনের প্রস্তাবে আরও রয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন, নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার, এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার নানা সুপারিশ। বিশেষ করে, একজন ব্যক্তি কতবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন তা নির্ধারণ, প্রধানমন্ত্রীর দলীয় প্রধান ও সংসদ নেতা হওয়ার বিধান রদ এবং নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, উচ্চকক্ষে বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে দলগুলোকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে। দলগুলো জাতীয় নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে উচ্চকক্ষে আসন পাবে।
কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, এতদিন দেশের ক্ষমতা কেন্দ্রিক ছিল একটি ব্যক্তির হাতে। নতুন প্রস্তাবে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং কার্যকর গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে সুপারিশ রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে এসব প্রস্তাবের বিষয়ে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টা করবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সংগঠন আগে থেকেই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের পক্ষে মত দিয়ে আসছে। এই নতুন প্রস্তাব তাদের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এই সংস্কারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে এবং দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া একটি নতুন মাত্রায় পৌঁছাবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন।