আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) তাদের নতুন প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুম এবং হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন। সংস্থাটি বলেছে, শেখ হাসিনা জামায়াতে ইসলামী নেতার ছেলে এবং সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমীকে হত্যার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
এইচআরডব্লিউর প্রকাশিত প্রতিবেদনটি, 'আফটার দ্য মুনসুন রেভ্যুলুশন: রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ', ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট আযমীকে গুম করার পরবর্তী ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, আযমীকে ওই রাত ১২টার দিকে রাজধানীর বড় মগবাজারের বাসা থেকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায়, যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই ঘটনার সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক অস্বীকার করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আযমীকে সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি দেয়া হলেও, আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে গুমের বিষয়টি একাধিকবার অস্বীকার করা হয়। শেখ হাসিনার শাসনামলে আযমী বারবার তার মুক্তির জন্য চেষ্টা করলেও, হাসিনা তার মুক্তি মঞ্জুর করেননি। এক পর্যায়ে, তিনি তাকে হত্যার পরামর্শ দেন।
এইচআরডব্লিউ আরো জানিয়েছে যে, শেখ হাসিনার শাসনামলে কমপক্ষে ৩ হাজার ৫০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে এবং এর জন্য র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করা হয়েছে। তাদের দাবি, শেখ হাসিনা এবং তার শীর্ষ কর্মকর্তারা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং গুম, নির্যাতন, এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী বিরোধীদলীয় নেতাদের, সাংবাদিকদের, সমালোচকদের এবং মানবাধিকার কর্মীদের টার্গেট করেছে, যেখানে মিথ্যা মামলা, জোরপূর্বক গুম, এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এছাড়া, প্রতিবেদনটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে সংস্কারের জন্য এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সুপারিশ করেছে।