চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, চলতি মাসেই শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আশাবাদী যে, তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে। শনিবার (১ মার্চ) বিকেলে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত একটি কর্মশালায় তিনি এসব মন্তব্য করেন। কর্মশালাটি দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার, পরিবেশগত সমস্যা এবং আইন প্রয়োগের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে আয়োজিত ছিল।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, "ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে, যা আওয়ামী লীগ সরকার স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।" তিনি আরও জানান, ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে, এবং এই প্রক্রিয়া শিগগিরই সম্পন্ন হতে পারে।
গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তাজুল ইসলাম বলেন, "বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে তখন বলা যাবে, কতদিন সময় লাগবে। কারণ, যে নথিগুলো আমাদের কাছে আছে, সেগুলোর মধ্যে ডিজিটাল প্রমাণ, লাইভ প্রমাণ, এবং ডকুমেন্টারি প্রমাণ রয়েছে। এছাড়া, দুই পক্ষের সাক্ষীর উপস্থিতিও গুরুত্বপূর্ণ। আদালতই নির্ধারণ করবেন, তারা কতদিন সময় নিবেন। তবে, ট্রাইব্যুনালের বিচার বিরতি ছাড়াই চলবে, এবং আমাদের পক্ষ থেকে যত দ্রুত সম্ভব এটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হবে।"
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, "এটা একটি সাধারণ খুনের মামলা নয়। এটি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা। এর বিস্তৃতি প্রায় ৫৬ হাজার বর্গমাইলজুড়ে। দুই হাজারের মতো মানুষ শহীদ হয়েছেন, এবং ২৫ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।" তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে বলেন, এই অপরাধের ভয়াবহতা অনেক বেশি, এবং এর জন্য দ্রুত এবং সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
সাক্ষ্যগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "সব আহত এবং শহীদ পরিবার ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হচ্ছেন না। এজন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমরা গণশুনানি আয়োজন করেছি। আমরা আহতদের কাছে যাচ্ছি, তাদের বোঝাচ্ছি যে, তাদের কাছে যে তথ্য আছে, সেগুলো আমাদের কাছে প্রদান করুন।" এই প্রক্রিয়াটি নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করার চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি। তবে, তিনি জানিয়েছেন যে, অপরাধীদের সমর্থকরা বিভিন্নভাবে ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করবেন, যা দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
তাজুল ইসলাম স্পষ্ট করে জানান, দেশের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হবে এবং শিগগিরই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।