শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ বিষয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সাংবাদিক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, “আমরা ভারতের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছি। প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে আবারও উদ্যোগ নেওয়া হবে।” তবে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, এ বিষয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো অনুশোচনা আছে কি না। উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘অনুশোচনা’ শব্দটি একটি ‘লোডেড টার্ম’। তিনি বলেন, “কে কতটুকু অনুতপ্ত, তা আমি জানি না। তবে আমরা বিষয়টিকে এভাবেই দেখছি যে, প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে আবারও উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবিতে একটি কূটনৈতিক নোট পাঠিয়েছিল। তাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে দেওয়া হয়। ভারত সরকার তখন তা গ্রহণ করার বিষয়টি স্বীকার করে, তবে কোনো চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়নি।
এদিকে, পানি বণ্টন ইস্যুতে তিস্তা চুক্তি এবং আগামী বছর মেয়াদোত্তীর্ণ হতে যাওয়া ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলেন মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, “এই বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য এবং আমরা সেই পথেই এগোচ্ছি।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ এই চুক্তিগুলো নবায়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ভারতের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে এই বিষয়ে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা চলছে।
এছাড়া, সম্প্রতি ঢাকা, বেইজিং ও ইসলামাবাদের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা নিয়ে কিছু গণমাধ্যমে বলা হয়েছিল, এটি ‘সার্কের বিকল্প জোট’ হিসেবে গঠিত হচ্ছে। এ বিষয়ে পরিষ্কার অবস্থান জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “এই ব্যাখ্যা মোটেও সঠিক নয়। এটি ছিল সহযোগিতার কিছু ক্ষেত্র নিয়ে একটি সাধারণ বৈঠক মাত্র, কোনো জোট নয়।”
তিনি যোগ করেন, “আমরা এখন পর্যন্ত আঞ্চলিক জোট হিসেবে সার্কের বাইরে অন্য কিছু বিবেচনায় নেই।”
সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যু, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়গুলো নিয়ে সরকারের অবস্থান যথেষ্ট কূটনৈতিক ও বাস্তবসম্মত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।