ফেনীর ১৫ বছর বয়সী হামিদুল্লাহ, যিনি জন্মগতভাবে দৃষ্টিশক্তিহীন, তার জীবনে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কখনোই বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং শিক্ষকদের আন্তরিকতায়, মাত্র দুই বছরের মধ্যে শুনে শুনে ৩০ পারা কোরআন মুখস্থ করেছেন তিনি।
হামিদুল্লাহ ফেনী সদর উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের কাজীরদিঘি এলাকার মাওলানা নূর নবী শরীফের ছেলে। শৈশব থেকে তার বাবা মাওলানা নূর নবী শরীফের কাছেই আরবি ভাষা শিখতে শুরু করেন। বাবা ও মাদরাসার শিক্ষকরা তার প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব পোষণ করেন, এবং তাকে কোরআন হেফজ করতে উৎসাহিত করেন। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর, হামিদুল্লাহ তার সর্বশেষ সবক অনুষ্ঠান শেষ করেন।
হামিদুল্লাহ বলেন, “বাবার অনুপ্রেরণা ছাড়া আমার এই সাফল্য সম্ভব হত না। মাদরাসায় সবসময় শিক্ষক ও সহপাঠীরা আমাকে সহযোগিতা করেছেন, এবং তাদের সহায়তায় আল্লাহর রহমতে দুই বছরের মধ্যে আমি হাফেজ হতে পেরেছি।” তিনি আরও বলেন, “আগামীতে আমি একজন বড় আলেম হতে চাই, সকলের দোয়া কামনা করি।”
হামিদুল্লাহর সহপাঠী আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা যারা দৃষ্টিশক্তি নিয়ে কোরআন মুখস্থ করেছি, হামিদুল্লাহ আমাদের জন্য এক বিশাল অনুপ্রেরণা। সে না দেখেও কোরআন হেফজ করেছে, এটি আমাদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত।”
মাদরাসার পরিচালক হাফেজ ক্বারি মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, “হামিদুল্লাহ অন্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে অনেক বেশি ইচ্ছাশক্তি ও মনোযোগী। তার পরিশ্রম এবং সহপাঠীদের সহযোগিতার মাধ্যমে সে দ্রুত সময়ের মধ্যে কোরআন মুখস্থ করতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠান তার পাশে দাঁড়িয়ে গর্বিত।”