গ্যাস সংকট মোকাবিলায় এবং শিল্প উৎপাদনে গতি আনতে সরকার বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলপিজি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। গ্যাস সরবরাহ ঘাটতির কারণে শিল্পে প্রাকৃতিক গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এরই প্রেক্ষিতে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে শিল্পে এলপিজি ব্যবহারের প্রস্তাব চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
বর্তমানে দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৪,৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট হলেও সরবরাহ হচ্ছে মাত্র ২,৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। ফলে ১,৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট ঘাটতি তৈরি হয়েছে। দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে, এবং নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারও তেমন আশাব্যঞ্জক নয়। শুধুমাত্র ভোলায় গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেলেও জাতীয় গ্রিডের অভাবে তার সুফল পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি।
সরকারি তথ্য মতে, বর্তমানে দেশে বছরে ১৮ লাখ টন এলপিজি ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে ১৫ শতাংশ শিল্পখাতে ব্যবহার হয়। তবে এ ক্ষেত্রে এতদিন কোনও নির্দিষ্ট নীতিমালা ছিল না। নতুন নীতিমালা কার্যকর হলে শিল্পে এলপিজি ব্যবহারের সুযোগ বাড়বে, যা প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর চাপ কমাবে। এলপিজি সরবরাহকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি শিল্প কারখানায় জ্বালানি সরবরাহ করবে।
গ্যাসের মতোই এলপিজি ব্যবহার করে শিল্পে জেনারেটর চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এর ফলে শিল্প মালিকরা বাড়তি খরচে হলেও নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারবেন।
হাইড্রোকার্বন ইউনিট ইতোমধ্যেই নীতিমালার খসড়া প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত নিয়েছে। নীতিমালাটি অনুমোদন হলে দ্রুত শিল্পে এলপিজি ব্যবহার শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারের এই উদ্যোগ শিল্প খাতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের গ্যাস সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।