লিভারে চর্বি জমার কয়েকটি সতর্কবার্তা, যেগুলো অবহেলা করা ঠিক নয়

লিভার আমাদের শরীরে নীরবে কাজ করা এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা বিপাকক্রিয়া, ডিটক্সিফিকেশন ও রোগ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখে। তবে যখন এতে অতিরিক্ত চর্বি জমা হতে থাকে, তখন দেখা দেয় নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD)। এ রোগের শুরুতে তেমন লক্ষণ বোঝা যায় না, কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট সংকেত আমাদের সচেতন করতে পারে। নিচে এমন কয়েকটি লক্ষণের কথা উল্লেখ করা হলো, যেগুলো দেখা দিলে লিভারের অবস্থা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত।

প্রথমত, যদি আপনি দীর্ঘ সময় ধরে অকারণে ক্লান্ত বোধ করেন, তবে তা ফ্যাটি লিভারের ইঙ্গিত হতে পারে। বিশ্রামের পরেও যদি ক্লান্তি না কাটে, মনোযোগে ঘাটতি পড়ে, কিংবা নিজেকে সবসময় ভারী মনে হয়, তবে এর পেছনে লিভারের ডিটক্সিফিকেশন ক্ষমতা কমে যাওয়ার ভূমিকা থাকতে পারে।

দ্বিতীয়ত, পেটের চারপাশে বাড়তি মেদ জমা হওয়া বা ওজন হঠাৎ বেড়ে যাওয়া — বিশেষ করে যখন খাদ্যাভ্যাস বা জীবনযাত্রায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন না আসে — তখন সেটিও হতে পারে লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমার ফল। চর্বি ঝরানোর প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হলে শরীরে সহজেই মেদ জমে যেতে পারে।

তৃতীয়ত, ত্বকে কিছু অস্বাভাবিক পরিবর্তন, যেমন কালো দাগ বা মাকড়সার মতো শিরার গঠন (স্পাইডার অ্যাঞ্জিওমাস), অনেক সময় ইঙ্গিত দেয় লিভারের বিপাকে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে বগল, ঘাড় বা কুঁচকিতে এসব দাগ দেখা দিলে তা ইনসুলিন প্রতিরোধ এবং লিভারের সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।

চতুর্থত, হজমে অস্বস্তি বা খাবারের প্রতি অনীহা — বিশেষত চর্বিযুক্ত খাবারের প্রতি — ফ্যাটি লিভারের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ। পেটে বিশেষ করে ডান উপরের অংশে ব্যথা, বমি বমি ভাব, অথবা খাবারের পরে ভারী লাগা দেখা দিলে তা লিভারের কার্যকারিতার ব্যাঘাতের লক্ষণ হতে পারে।

এই লক্ষণগুলো অবহেলা না করে সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো লিভারের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।