বাংলাদেশের লালমনিরহাট বিমানবন্দর পুনরায় চালু করা হলে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহরের দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বিমানঘাঁটি সচল করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিশেষ প্রতিনিধি রত্নদ্বীপ চৌধুরী এ তথ্য দেন।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, চীনের সহযোগিতায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি পুনরায় চালুর পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। যদিও সোমবার ঢাকায় সেনাসদরে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্স অধিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বিমানবন্দরটি প্রয়োজন অনুযায়ী চালু করা হচ্ছে। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, চীনা কোনো সংস্থা এটি ব্যবহার করবে কি না, সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
তবে ভারতীয় মিডিয়ার দাবি, লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি যদি চীনের সহায়তায় চালু হয়, তবে সেটি ভারতের জন্য কৌশলগত হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ এটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত ভারতের একটি কৌশলগত ভূখণ্ডও এখান থেকে খুব কাছে। এই ‘চিকেন নেক’ করিডোর দিয়েই ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে সংযোগ রক্ষা করা হয়।
এনডিটিভি আশঙ্কা প্রকাশ করে জানায়, বিমানবন্দরটি চীনের সহযোগিতায় সচল হলে সেখানে যুদ্ধবিমান, রাডার ও নজরদারির সরঞ্জাম বসানো হতে পারে, যা ভারতের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক। এর জবাবে ভারত কৈলাশহর বিমানঘাঁটি পুনরায় চালুর পরিকল্পনা করছে। যদিও এটিকে প্রাথমিকভাবে বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য ব্যবহার করা হবে, তবে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে যাতে তা সামরিক প্রয়োজনেও ব্যবহারযোগ্য হয়, সে জন্য অবকাঠামো উন্নত করার কথা ভাবছে দেশটি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ভারত বহুদিন ধরে ‘মূল্যবান মিত্র’ হিসেবে দেখে এসেছে, যিনি চীন ও পাকিস্তানের প্রভাব উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রবেশে বাধা হয়ে ছিলেন। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে থাকা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ভারত ততটা বন্ধুবান্ধব হিসেবে বিবেচনা করছে না। তার চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের অবস্থানও ভারতের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে গত ২৬ মে ভারতের একটি প্রতিনিধি দল কৈলাশহর বিমানঘাঁটিতে পরিদর্শনে যায়। সেখানে বিমানবন্দরের বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তারা জানান, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সূত্র: এনডিটিভি