র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির পুলিশ সংস্কার কমিটি মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে এই সুপারিশ উপস্থাপন করে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পুলিশ সংস্কার কমিটির প্রধান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “রাষ্ট্রের অত্যাবশ্যকীয় সেবাগুলোর মধ্যে পুলিশের সংস্কার এখন সময়ের দাবি। আমরা সুপারিশ করেছি পুলিশ কমিশন গঠনের, যার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনী সঠিক দিকনির্দেশনা পাবে।”
বিএনপির প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে স্বরাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতিকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আট সদস্যের কমিশনে সংসদ সদস্য, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, সমাজের বিশিষ্ট নাগরিক, এবং পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
বিএনপির সুপারিশমালায় উল্লেখ করা হয়েছে যে র্যাব ইতোমধ্যে দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক নিন্দিত ও সমালোচিত। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন এবং জাতিসংঘের পাশাপাশি বিভিন্ন মহল বাহিনীটিকে দেশে সংঘটিত গুম, খুন ও নিপীড়নের জন্য দায়ী করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা এই বাহিনীর কার্যক্রম বন্ধ করে তাদের দায়িত্ব আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং থানা পুলিশের মাধ্যমে পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি কমিউনিটি পুলিশিংয়ের উপর জোর দিয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রতিটি ইউনিয়ন ও শহরের ওয়ার্ডে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ দিয়ে কমিউনিটি পুলিশ ব্যবস্থা চালু করা হবে। এ ব্যবস্থা পুলিশ ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব কমাতে এবং সমাজে অপরাধ প্রবণতা হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
পুলিশ বাহিনীর চিকিৎসাসেবার জন্য প্রতিটি জেলা শহরে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল স্থাপন বা সম্প্রসারণের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া, বিভাগীয় বা মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের অনুরূপ হাসপাতাল পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে।
বিএনপির মতে, পুলিশের জনবল এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে পুলিশের দূরত্ব কমানোর জন্য এই সুপারিশমালা বাস্তবায়ন জরুরি।